বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা
১৮ জুন ২০১২গত এক বছর থেকে এরকম আরেকটি সংস্থা জার্মান ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তি দিয়ে আসছে৷ সেই সংস্থা ‘ডয়েচলান্ড স্টিপেন্ডিয়ুম'৷ এক বছরের মধ্যে বেশ ভালো সাড়া জাগিয়েছে ‘ডয়েচলান্ড স্টিপেন্ডিয়ুম'৷ ২০১১ সালের গ্রীষ্মকালীন সেমেস্টার থেকে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে তাদের অনেকেই এই বৃত্তির সাহায্যে পড়াশোনা করছে৷ এবার এসেছে আরেকটি সংস্থা নাম ‘স্টিপেন্ডিয়াটেন ডেয়ার স্টুডিয়েনস্টিফটুং ডয়েচেস ফল্ক'৷
প্রশ্ন উঠতে পারে ঠিক কে বা কাকে নির্বাচিত করা হবে এই বৃ্ত্তির জন্য? এর জন্য শুধু কী স্কুল ফাইনালে ভালো করাই যথেষ্ঠ? না, মোটেই তা নয়৷ জানালো হুয়া জিং হান৷ তার কথায়, ‘‘আমাদের এই বিষয়ে একটি সেমিনার হয়েছিল৷ তখন থেকেই আমরা সবাই জানতাম যে পোস্টে যদি অনেক বড় একটি চিঠি আসে, তার অর্থ হল বৃত্তি দেয়ার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে৷ আর যদি ছোট একটি চিঠি আসে তার মানে তাকে প্রত্যাখান করা হয়েছে৷ এরপর আমি একদিন বাড়ি ফিরে দেখি যে অনেক বড় একটি খাম আমার জন্য চিঠি অপেক্ষা করছে৷ আমি আমার আনন্দ ধরে রাখতে পারছিলাম না৷''
জিং হান বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সেমেস্টারে পড়ছে৷ কুড়ি বছর বয়স্ক এই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া পূর্ণ বৃত্তি পেয়েছে ‘স্টিপেন্ডিয়াটেন ডেয়ার স্টুডিয়েনস্টিফটুং ডয়েচেস ফল্ক' থেকে৷ তবে প্রাথমিক নির্বাচনে তার স্কুল তাকে সাহায্য করেছিল৷ একটি রিকমেন্ডশন লেটার লিখে দিয়েছিল৷ স্কুলের বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা ছাড়াও বিভিন্ন ধরণের কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেছিল৷ এরপরই তাকে নির্বাচিত করা হয়৷
জিং হান জানায়, ‘‘আমি কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না যে প্রাথমিক নির্বাচনে টিকে যাওয়ার পর আমাকে আর কী কী করতে হবে৷ সেমিনারে কী থাকতে পারে৷ তবে আমাকে সাদরে গ্রহণ করা হয়েছিল৷ তারপরেও আমি বলবো কেউই জানে না কার সামনে কী অপেক্ষা করছে৷ কী ধরণের প্রশ্ন আসতে পারে, কমিশনের প্রত্যাশা কী, তারা কী চায়৷ আমি শুধু নিজেকে এই বলে সান্তনা দিচ্ছিলাম যে আমার যেখানে ভালো লাগে আমি সেখানে যাবো৷ মানিয়ে চলার চেষ্টা করবো৷''
কমিশনের সঙ্গে কথা বলা, ইন্টারভিউ এবং আলোচনার সময় প্রার্থীর বায়োডাটা এবং কী কারণে বৃত্তির প্রয়োজন তা খতিয়ে দেখা হয়৷ ঠিক কোন বিষয়ের ওপর কমিশন জোর দিচ্ছে, তা কেউই জানেনা বা বলতে পারে না৷ জিং হান স্কুল ফাইনালে প্রতিটি বিষয়ে ১.০ স্কোর করেছিল৷ এটাই সর্বোচ্চ নম্বর৷ কিন্তু তা যথেষ্ঠ ছিল না৷ অবসর সময়ে জিং হান কাজ করে ‘গ্রিন পিস'-এ৷ সামাজিকভাবে সে নিজেকে সক্রিয় রেখেছে৷ আর সেটাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে৷ আরো অনেকের বায়োডাটায় আরো অনেক কিছুই ছিল৷ কিন্তু তাদের পিছনে ফেলে এগিয়ে গেছে জিং হান৷ যা সে প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারছিল না৷
জিং হান বলে, ‘‘আমি সবসময়ই মনে করতাম যে কমিশন অন্য কাউকে খুঁজছে৷ যাদের পড়াশোনা, কাজের ধরণ একেবারে ভিন্ন৷ আমরা সবসময়ই এসব অন্যের কাছ থেকে শুনতাম৷ তবে যে এসব খুব বিশ্বাস করতাম বা প্রভাবিত হতাম, তা নয়৷ অন্যান্য যারা বৃত্তি পেয়েছে তাদের সঙ্গে আমি মিশেছি৷ তারা কেউই আমার মতো নয়৷ আমরা সবাই একেকজন একেক রকম৷''
প্রশ্ন আসলে ঠিক কী দেখা হয় একজন প্রার্থীর বায়োডাটায়? কোন কোন বিষয়ের ওপর জোর দেয়া হয়? কমিশনের জেনারেল সেক্রেটারি গেরহার্ড টয়ফেল৷ তিনি জানান, ‘‘পড়াশোনায় ভালো হতে হবে সেই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ এছাড়া প্রার্থী সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কিনা - তা দেখা হয়৷ অথবা আবহাওয়া ও পরিবেশ নিয়ে প্রার্থী চিন্তিত কিনা, সে বিষয়ে কাজ করছে কিনা তা আমরা দেখি৷ এগুলো কমিশনকে নিঃসন্দেহে বেশ ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে৷ এসবের মধ্যে দিয়েই প্রার্থী নিজেকে একজন দায়িত্বশীল মানুষ হিসেবে প্রমাণ করতে পারে৷ অনেকেই আছে, যারা পশুপাখি ভালোবাসে৷ তারা স্বেচ্ছাসেবক হয়ে সপ্তাহে একদিন কাজ করছে চিড়িয়াখানায়৷ অনেকেই কাজ করছে দমকল বাহিনীর সঙ্গে৷ এদের আমরা কখনোই ফিরিয়ে দেই না৷''
প্রতিবেদন: আনটিয়ে বিন্ডার / এমজে
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ