জার্মানিতে ভুয়া খবর আটকাবে ফেসবুক
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসেই ফেসবুক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের একটি কর্মসূচি শুরু করে৷ এক্ষেত্রে ফেসবুক এবিসি নিউজ ও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের মতো সংবাদ সংগঠনের সঙ্গে সহযোগিতা করবে; অপরদিকে পলিটিফ্যাক্ট, স্নোপস এবং ফ্যাক্টচেকের মতো ফ্যাক্ট-চেকিং গ্রুপ বিতর্কিত কাহিনীগুলির সত্যতা যাচাই করবে৷
ফেসবুক যে এই পন্থা পরীক্ষা করার দ্বিতীয় দেশ হিসেবে জার্মানিকে বেছে নিয়েছে, তার একটা কারণ এও হতে পারে যে, গতবছরের শেষে জার্মান সরকার ঘোষণা করেছে যে, ফেক নিউজের বিস্তারের জন্য দায়ী কোম্পানিগুলির উপর কঠিন অর্থদণ্ড আরোপের কথা ভাবা হচ্ছে৷ যেমন: ভুয়া বা বিভ্রান্তিকর তথ্য বা হেট স্পিচ রিপোর্ট হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরানো না হলে ৫০০,০০০ ইউরো অবধি ফাইন হতে পারে৷
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অভিজ্ঞতার পর থেকে বহু জার্মান রাজনীতিকের আশঙ্কা যে, রাশিয়া আগামী সেপ্টেম্বরে জার্মান সংসদীয় নির্বাচনের আগে অনুরূপ প্রভাব ফেলার চেষ্টা করতে পারে৷ যে ধরনের ভুয়া খবর ছড়িয়ে নির্বাচনের ফলাফলকে রাশিয়ার অনুকূল করে তোলা সম্ভব, সেগুলোকে সোশ্যাল মিডিয়ায় অবাধ বিস্তার লাভ করতে দেওয়া যায় না৷
ভুয়া খবরের কিছু দৃষ্টান্ত
২০১৬ সালের জানুয়ারিতে বার্লিনে লিজা নামের এক জার্মান কিশোরীকে এক দল অভিবাসী ধর্ষণের খবর ভাইরাল হয়ে যায়৷ বিশেষ করে রুশ মিডিয়ায় এই খবর বিপুল কভারেজ পায়৷ পরে কিশোরীটি স্বীকার করে যে, সে সব কিছু বানিয়ে বলেছে৷
২০১৭-র সূচনায় আসে মার্কিন ব্রাইটবার্ট সংস্থা থেকে শুরু হয়ে জার্মানিতে ছড়িয়ে পড়ে একটি ভুয়া কাহিনী৷ সেখানে বলা হয়, ১,০০০ সিরীয় উদ্বাস্তু ‘জার্মানির প্রাচীনতম গির্জায় আগুন ধরিয়েছে'৷ তার কিছুদিন পরেই সিরীয় উদ্বাস্তু আনাস মোদামানি ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা করেন, কেননা মোদামানি চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে তাঁর সেল্ফি পোস্ট করার পর তার বিরুদ্ধে ব্রাসেলসের সন্ত্রাসী আক্রমণে জড়িত থাকার যে ফেক নিউজ প্রকাশিত হয়েছিল, ফেসবুক তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি৷
সেপ্টেম্বরে জার্মানিতে নির্বাচন৷ বাজফিড খবর দিয়েছে যে, চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের বিরুদ্ধে ভুয়া খবরের সংখ্যা ইতিমধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে এবং তার মধ্যে দক্ষিণপন্থি সূত্র থেকে আসা নেতিবাচক খবরই বেশি৷
ফেক নিউজ ফিল্টারিং টুল...
‘ফেক নিউজ ফিল্টারিং টুল' থেকে শুরু করে ‘ফ্যাক্ট-চেক বাটন' অবধি বিভিন্ন নাম দেওয়া হচ্ছে বস্তুটিকে৷ ফেসবুক ব্যবহারকারী যদি কোনো পোস্ট দেখে মনে করেন যে, এটা ফেক নিউজ হতে পারে, তাহলে তারা পোস্টটির ওপরের ডান দিকের কোণায় ক্লিক করে সেটিকে ফেক নিউজ হিসেবে ফ্ল্যাগ করতে পারবেন৷ ফেসবুকের কর্মীরা তখন সেই পোস্টটিকে দেখবেন, সেই সঙ্গে সেটিকে পাঠানো হবে বার্লিন ভিত্তিক একটি নিরপেক্ষ ফ্যাক্ট-চেকিং সংগঠনে, যার নাম ‘করেক্টিভ'৷ করেক্টিভ যদি পোস্টের কাহিনীটিকে অনির্ভরযোগ্য মনে করে, তাহলে সেটিকে ‘ডিসপিউটেড' বা ‘বিতর্কিত' বলে ফ্ল্যাগ করা হবে৷
ফেক নিউজ হিসেবে ফ্ল্যাগ করা থাকলেও লোকে সেটিকে শেয়ার করতে পারবেন, কিন্তু তারা একটি ওয়ার্নিং পাবেন৷ এছাড়া পোস্টটি নিউজ ফিডের অ্যালগরিদমে অগ্রাধিকার পাবে না৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন মন্তব্যে৷