শরণার্থীদের নতুন সুযোগ
২৮ এপ্রিল ২০১৫গত ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশ করা একটি নতুন আইনের খসড়ায় এই সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে৷ তবে এর আওতায় বিদেশি অপরাধীদের তাদের দেশে পাঠিয়ে দেয়ার ব্যবস্থাও সহজ করার কথা বলা হয়েছে৷
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন আইনের আওতায় অবৈধ বিদেশিদের থাকার অনুমতিপত্র পেতে কয়েকটি শর্ত পূরণ করতে হবে৷ যেমন জার্মানিতে আট বছরের বেশি সময় ধরে থাকতে হবে, নিজেরা উপার্জন করে চলতে সমর্থ হতে হবে, জার্মান ভাষার পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকতে হবে৷ তবে শরণার্থীরা যদি বাবা-মা হন, তাহলে তাঁদের জার্মানিতে কমপক্ষে ছয় বছর থাকলেই হবে৷
তবে থাকার অনুমতি ছাড়াই যে সব বিদেশি জার্মানিতে বসবাস করছেন, নতুন আইন তাঁদের অবস্থা আরও কঠিন করে তুলতে পারে – বিশেষ করে তাঁরা যদি সহযোগিতা না করেন কিংবা আইনের শর্তগুলো লঙ্ঘন করেন৷
জার্মানিতে এমন অনেক মানুষ আছেন যাঁরা বিতাড়িত হওয়ার ভয়ে নিজেদের পরিচয় গোপন রাখেন৷ সেক্ষেত্রে নতুন আইন কর্তৃপক্ষকে ই-মেল অ্যাকাউন্ট, মোবাইল ফোন ও পেনড্রাইভের তথ্য ব্যবহার করে পরিচয় গোপনকারীর পরিচয় উদ্ধারের অনুমতি দেবে৷ উল্লেখ্য, প্রতিবছর জার্মানি থেকে গড়ে ১০ হাজার অবৈধ বিদেশিকে তাঁদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়৷
এছাড়া অনুমতি থাকা সত্ত্বেও কোনো বিদেশিকে যদি জার্মানির জন্য হুমকি মনে করা হয় কিংবা তাঁকে যদি কোনো অপরাধে এক বছরের সাজা দেয়া হয়, তাহলে খসড়া আইনে ঐ বিদেশিকে বিতাড়নের প্রক্রিয়া আরও সহজ করা হয়েছে৷
কিছু পরিসংখ্যান
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী, জার্মানিতে বর্তমানে অনুমতিপত্র ছাড়া বসবাস করা বিদেশির সংখ্যা প্রায় দেড় লক্ষ৷ এর মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার বিদেশি আট বছরের বেশি সময় ধরে জার্মানিতে বাস করছেন৷ ফলে খসড়া আইনের আওতায় তাঁরা হয়ত অনুমতিপত্র পেতে পারেন৷ তবে কিছু শর্ত আরও কঠিন হওয়ায় কতজনকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে, সেটা পরিষ্কার নয়৷
কে কী বলছেন...
জার্মানির শাসক দল বা খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দল সিডিইউ প্রস্তাবিত এই খসড়া আইনের প্রশংসা করেছে৷ অন্যদিকে সবুজ ও বাম দল এর সমালোচনা করেছে৷ বাম রাজনীতিক উলা ইয়েল্পকে বলেছেন, খসড়া আইনের মানে হচ্ছে, ‘‘যাঁরা আমাদের কাজে আসছেন এবং যাঁদের থাকতে দিতে সরকারের কোনো খরচ হচ্ছে না, শুধু তাঁরাই থাকতে পারবে৷ এটা অমানবিক৷''
এদিকে ক্যাথলিকদের সংস্থা জেআরসি, যারা শরণার্থীদের সহায়তা দিয়ে থাকে, তাদের জার্মান শাখার একজন পরিচালক ফাদার ফ্রিডো ফ্ল্যুগার বলছেন, ‘‘২০১৪ সালে জার্মানিতে এক লক্ষ ৪০ হাজার শরণার্থী এসেছে৷ জার্মানির মতো ধনী দেশের জন্য সেটা বড় কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়৷''