হামলার পরে চাপে ম্যার্কেল
২৬ জুলাই ২০১৬গত বছর অভিবাসী সংকট যখন চরম রূপ ধারণ করেছিল, তখন জার্মান চ্যান্সেলর তাঁর নানা মুখী পদক্ষেপের কারণে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন৷ কিন্তু এখন, জার্মানির দক্ষিণপন্থি অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি পার্টি (এএফডি) ইসলাম-বিরোধিতার পাশাপাশি অভিবাসনের মতো বিষয়ে তাদের অবস্থান খোলসা করেছে৷ পপুলিস্ট এই দলটির পাশাপাশি অন্যান্য সমালোচকরাও ম্যার্কেলকে তুলোধুনা করতে ছাড়েননি৷ অথচ একটা সময় ম্যার্কেল নিজেকে ‘শরণার্থী চ্যান্সেলর' হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন, যা তাকে সম্মান দিয়েছিল৷ বিরোধীরা অবশ্য তখনই মুচকি হেসেছিলেন৷
আসলে গত কয়েক সপ্তাহে একের পর হামলার ঘটনায় ম্যার্কেলের জনপ্রিয়তায় সত্যিই ভাটা পড়েছে৷ গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে একই কথা৷ তারা বলছে, জার্মানিতে শরণার্থীদের প্রবেশ এখন সীমিত করা উচিত৷ আর এ জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে ম্যার্কেলের খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দল সিডিইউ-কেই৷
ম্যার্কেলের অবস্থান, বিরোধিতা
‘জার্মানির জন্য বিকল্প' এএফডি দল যেভাবে সিডিইউ-এর সমালোচনা শুরু করেছে, করছে, তাতে কোণঠাসা হয়ে পড়ে দলটি৷ এমন পরিস্থিতিতে যেখানে সব দলের একসাথে কাজ করা উচিত, সেখানে এএফডি নেতারা যেন ম্যার্কেলকে দোষ দিতেই ব্যস্ত৷ মতামত জরিপেও ম্যার্কেলের অবস্থান কিছুটা নেমে গেছে৷
পর পর কয়েকটি হামলার পর জার্মান জনগণ ম্যার্কেল এবং শরণার্থীদের এক কাতারে দাঁড় করাচ্ছে৷ তাই যখনই গণমাধ্যমে শরণার্থীদের বিরুদ্ধে কিছু লেখা হয়, তা হয়ে দাঁড়ায় ম্যার্কেলের বিরুদ্ধে৷ যদিও ঐ চারটি জায়গায়, অর্থাৎ যেখানে হামলা হয়, সেখানে শরণার্থীদের সঙ্গে কোনো যোগসূত্র পাওয়া যায়নি, বা জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ তবে তদন্ত এখনো চলছে৷
এএফডি-র জন্য ভালো সুযোগ
এই সময়টার ভালো ফায়দা লুটছে এএফডি৷ দলটির নেতারা সমর্থকদের বলছেন, ‘‘আমরা সবসময় বলেছি যে, অনিয়ন্ত্রিতভাবে অভিবাসীদের প্রবেশ করতে দেয়াটা বিপজ্জনক হতে পারে৷'' বলা বাহুল্য, দলটির রাজনৈতিক নেতারা ফেসবুক ও টুইটারে এ কথা বলে জনগণকে নিজেদের দলে টানতে চাইছেন৷ ম্যার্কেলের ‘সবার জন্য উন্মুক্ত দ্বার' নীতিকে এ ঘটনার জন্য দায়ী করেছেন তাঁরা৷
জার্মানির পূর্বাঞ্চলে বর্তমানে অবকাশ যাপন করছেন ম্যার্কেল৷ কিন্তু এ সময়টা তিনি যে খুব উপভোগ করছেন না, তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ কেননা পুরো দেশের দায়িত্বভার যাঁর কাধে তিনি যে এ পরিস্থিতিতে খুব একটা ভালো থাকবেন না, তা বলাই যায়৷
চতুর্থ দফা নির্বাচন প্রসঙ্গ
এখন থেকে ঠিক একবছর পর জার্মানিতে আবারও সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা৷ ম্যার্কেল কিন্তু এখনও জানাননি তিনি পরের বার নির্বাচনে লড়বেন কিনা৷ আসলে এটা অনেকটাই নির্ভর করছে শরণার্থী ইস্যুতে তিনি কতটা সফল হন, তার ওপর৷ এর মধ্যে প্যারিস ও ব্রাসেলসে হামলায় তাঁর সে সম্ভবনায় কিছুটা ভাটা পড়েছে বৈকি!
বন্ধু, আপনি কি লেখকের সঙ্গে একমত? জানান নীচের ঘরে৷