জার্মান পররাষ্ট্র নীতি
৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মিত্রশক্তি দ্বিধাবিভক্ত জার্মানির উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছিল দিয়েছিল৷ ১৯৯০ সালে দুই জার্মানির পুনরেকত্রীকরণের পর সার্বভৌমত্ব আবার পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়৷ তারপর সংসদের অনুমোদন নিয়ে বিদেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো আবার জার্মান সৈন্য পাঠানো শুরু হয়৷ ইরাকে মার্কিন সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে তৎকালীন জার্মান চ্যান্সেলর গেয়ারহার্ড শ্র্যোডারের দৃঢ় অবস্থান জার্মানির পররাষ্ট্র নীতিকে নতুন এক মাত্রায় নিয়ে যায়৷ জার্মান পুনরেকত্রীকরণের প্রায় দুই যুগ পর জার্মানির পররাষ্ট্র নীতির আরও বিবর্তনের ডাক শোনা যাচ্ছে৷
সপ্তাহান্তে মিউনিখ শহরে নিরাপত্তা সম্মেলনে খোদ জার্মান প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘নতুন জার্মান পররাষ্ট্র নীতি'-র রূপরেখা তুলে ধরলেন৷ উদ্বোধনী ভাষণে প্রেসিডেন্ট ইওয়াখিম গাউক পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতির ক্ষেত্রে জার্মানি এতকাল যে সতর্কতা ও সংযম দেখিয়ে এসেছে, তার অবসানের ডাক দেন৷ আন্তর্জাতিক সহযোগী হিসেবে জার্মানিকে আরও দ্রুত সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে, বলেন তিনি৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক ভাল্টার স্টাইনমায়ার বলেন, জার্মানি আসলে এত বড় এক শক্তি, মাঠের প্রান্তে বসে পররাষ্ট্র নীতি সম্পর্কে শুধু মন্তব্য করা তাকে মানায় না৷ জার্মানি এখনো একমাত্র শেষ উপায় হিসেবে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করার পক্ষে৷ তবে এই নীতিকে দায়িত্ব এড়িয়ে যাবার পথ হিসেবে ভুল বোঝার অবকাশ থাকলে চলবে না, বলেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷
আপাতত আফ্রিকার সংকটমোচনের ক্ষেত্রে জার্মানি আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের আভাস দিয়েছে৷ আফ্রিকার দেশ মালিতে সামরিক অভিযান আরও জোরদার করতে চায় জার্মানি৷ সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে ইইউ মিশনেও সহায়তার ইঙ্গিত দিয়েছে জার্মানি৷
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জার্মানির এই নতুন উদ্যমকে স্বাগত জানিয়েছে৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রী চাক হাগেল জার্মানির নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন-এর সঙ্গে প্রথম আলোচনায় জার্মান সরকারকে ধন্যবাদ জানান৷ হাগেল ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি সামগ্রিকভাবে ন্যাটোর মধ্যে ইউরোপের আরও সক্রিয় ভূমিকার ডাক দিয়েছেন৷
জার্মানির দুই প্রধান দলের মহাজোট সরকার পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা নীতির ক্ষেত্রে আরও সক্রিয় ভূমিকার পথে চললেও বিরোধী বামপন্থি ও সবুজ দল এমন মনোভাবের কড়া সমালোচনা করেছে৷ বামপন্থি ‘ডি লিংকে' দলের প্রধান বলেন, ফেডারেল জার্মানির প্রতিষ্ঠার সময়েই সামরিক সংযমের বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে উঠেছিল৷ রাষ্ট্রের বর্তমান চরিত্রে পরিবর্তন সম্পর্কে সাবধান করে দিয়েছেন তিনি৷ সবুজ দলও সামরিক ক্ষেত্রে জার্মানির অত্যধিক সক্রিয় ভূমিকা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে৷
এসবি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি)