জার্মানির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন স্টাইনমায়ার
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭জার্মানির রাজধানী বার্লিনে রবিবার ১,২৬০ সদস্যের এক বিশেষ অ্যাসেম্বলিতে স্টাইনমায়ারকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয়৷ আগে থেকেই তাঁর প্রেসিডেন্ট হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত ছিল৷ আর ভোটাভুটিতে তাঁর কাছাকাছিও ছিলেন না অন্য কোন প্রার্থী৷ জার্মানির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইওয়াখিম গাউকের স্থলাভিষিক্ত হবেন তিনি৷ গাউকের বয়স এখন ৭৭ বছর৷ মূলত এই কারণেই তিনি দ্বিতীয়বার প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন৷
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর ভাষণে স্টাইনমায়ার জার্মানিকে ‘আশার নোঙ্গর' উল্লেখ করে বলেন, দেশটির অন্যান্য দেশের কাছে পথিকৃৎ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে৷ তিনি বলেন, ‘‘জার্মানি অন্যদের সাহসী হতে উৎসাহ যোগায়, এটা এজন্য নয় যে সবকিছু এখানে ভালো চলছে, বরং আমরা দেখেয়েছি একটা দেশ কতটা উন্নতি করতে পারে৷''
ইউরোপে দক্ষিণপন্থি দলগুলোর উত্থান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বিরোধী মনোভাব বেড়ে যাওয়ার দিকে পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত দিয়ে স্টাইনমায়ার জানান, ইউরোপের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র রক্ষায় জার্মানিকে কাজ করতে হবে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মূল্যবোধগুলো অভেদ্য নয়, তবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে সেগুলো শক্তিশালী৷''
যদিও ভোটাভুটির ব্যালট পেপারে আরো চারজন প্রতিদ্বন্দ্বীর নাম ছিল, তা সত্ত্বেও কার্যত প্রতীকী কিন্তু নৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রেসিডেন্ট পদে জার্মানির রাজনীতিবিদদের প্রথম পছন্দ ছিল স্টাইনমায়ার৷ নিজের দল সামাজিক গণতন্ত্রী পার্টি (এসপিডি) ছাড়াও চ্যান্সেলর ম্যার্কেল এবং তাঁর রক্ষণশীল দল (সিডিইউ/সিএসইউ)-ও স্টাইনমায়ারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন৷ এমনকি সবুজ দল এবং মুক্ত গণতন্ত্রী পার্টি (এফডিপি)-ও স্টাইনমায়ারের পক্ষে ছিল৷ ফলে তাঁর প্রসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি ছিল একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র৷
প্রসঙ্গত, জার্মানরা সরাসরি ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেন না৷ ৬৩০জন জার্মান সাংসদ এবং দেশটির ষোলটি রাজ্যের সমান সংখ্যক প্রতিনিধি বার্লিনে এক বিশেষ অ্যাসেম্বলিতে জড়ো হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ভোট দেন৷ তবে একজন প্রার্থীকে সব বড় দলের সমর্থন দেয়াটা সচরাচর, বিশেষ করে নির্বাচনের বছর তেমন একটা দেখা যায় না৷ স্টাইনমায়ারের নির্বাচনকে তাই বিবেচনা করা হচ্ছে জার্মানির সবচেয়ে বড় দুই দলের ঐক্যমতে তৈরি বর্তমান সরকারের সর্বশেষ যৌথ সিদ্ধান্ত হিসেবে৷
আগামী জাতীয় নির্বাচনে এসপিডি কার্যতঃ তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী মার্টিন শ্যুলৎসকে চ্যান্সেলর পদে ম্যার্কেলের বিপক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামিয়েছে৷ শরণার্থী ইস্যুতে শক্ত অবস্থান নিয়ে জনপ্রিয়তা হারানো জার্মানির বর্তমান চ্যান্সেলরের পক্ষে সেই নির্বাচনে জয় বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
এআই/এপিবি (এপি, ডিপিএ)