জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন
৯ জুন ২০১৫এবারের জি সেভেন সম্মেলনও পড়েছিল বিক্ষোভের মুখে৷ সাতটি শিল্পোন্নত দেশ বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতবিনিময় করে বড় বড় সমস্যা সমাধান করার অঙ্গীকার করলেও বিপুল অঙ্কের অর্থের অপচয় ছাড়া কাজের কাজ কিছুই হয় না – এমন ক্ষোভ থেকেই জি সেভেন বিরোধী স্লোগান দিচ্ছিলেন বিক্ষোভকারীরা৷ বাভারিয়ান শ্লস এলমাউ-এর সামনে সম্মেলনের প্রথম দিনে অনেকেই এসেছিলেন ‘'জি-৭ নরকে যাও' লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে৷ কিন্তু সোমবার সম্মেলনের শেষ দিনে খুব একটা বিক্ষোভ দেখা যায়নি৷ কালো পোশাক পরা স্থানীয় এক বিক্ষোভকারী জানালেন, তাঁর ধারণা, অনেকে ক্লান্ত হয়ে পড়ায় ঘরে ফিরে গেছেন৷
ইউক্রেন সংকটে ভূমিকার জন্য রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যে আলোচনা হবে এমন ইঙ্গিত আগেই পাওয়া গিয়েছিল৷ এক সাক্ষাৎকারে ক্যানাডার প্রদানমন্ত্রী স্টিফেন হার্পার বলেছিলেন, ‘‘ভ্লাদিমির পুটিন থাকতে রাশিয়া আর জি-৭-এ ফেরার যোগ্যতা রাখে বলে আমি মনে করিনা৷ পুটিন ওখানে (জি-৭) এসে বসতে চাইলে ক্যানাডা কঠোরভাবে বিরোধিতা করবে৷'' রাশিয়াকে এখনই জি-সেভেনে ফেরানোর প্রস্তাব একেবারেই ওঠেনি৷ বরং সম্মেলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে আঙ্গেলা ম্যার্কেল জানিয়েছেন, ক্রাইমিয়া ‘দখল' করে নেয়ায় রাশিয়ার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল, পূর্ব ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি পুরোপুরি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত তা-ও বলবৎ থাকবে৷ তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট, যুক্তরাজ্য, ইটালি, ফ্রান্স, জাপান এবং ক্যানাডা – অর্থাৎ স্বাগতিক জার্মানি ছাড়া সম্মেলনের বাকি ছয় দেশের প্রতিনিধিরাও এ বিষয়ে অভিন্নমত ছিলেন৷
চলতি শতক শেষ হবার আগে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণ এবং জীবাস্ম জ্বালানি ব্যবহার কমানোর মাধ্যমে বিশ্ব উষ্ণায়ণ ২ ডিগ্রির নীচে রাখার লক্ষ্যমাত্রাও স্থির করা হয়েছে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোতে তেল, গ্যাস এবং কয়লার পরিবর্তে বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার বাড়াতে ১০০ বিলিয়ন ডলার (৯০ বিলিয়ন ইউরো) বরাদ্দের অঙ্গীকার আগেই করেছিল জি-৭৷ এ সম্মেলনেও সেই অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত হয়েছে৷
উন্নয়নশীল দেশগুলোর অপুষ্টি আর ক্ষুধায় আক্রান্ত অন্তত ৫০ কোটি মানুষকে ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যমুক্ত করার অঙ্গীকারের কথাও শোনা গেছে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে৷ ওবামা-ম্যার্কেলরা অবশ্য এই লক্ষ্য পূরণের জন্য অর্থ বরাদ্দের ঘোষণা দেননি৷
এসিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)