জুতো ছাপার কল
৯ আগস্ট ২০১৪সুইডিশ ফ্যাশন ডিজাইনার নাইম ইয়োসেফির তৈরি এই মডেলটির নাম ‘মেলোনিয়া'৷ এর বিশেষত্ব হলো: এর উৎপাদন পদ্ধতি৷ এই হাইহিল জুতোজোড়া পলিয়ামিড দিয়ে তৈরি৷ এগুলো এসেছে থ্রি-ডি প্রিন্টার থেকে৷ নাইম ইয়োসেফি বলেন: ‘‘আমার থ্রি-ডি প্রিন্টিং সম্পর্কে কোনো ধারণাই ছিল না৷ আমি একটা অরগ্যানিক আকার সৃষ্টি করার পন্থা খুঁজছিলাম৷ তখন আমি এই নতুন ত্রিমাত্রিক মুদ্রণ পদ্ধতির কথা শুনি৷ থ্রি-ডি প্রিন্টিং একটা খুব উচ্চ মানের প্রযুক্তি, যা দিয়ে নতুন নতুন আকৃতি তৈরি করা যায়৷''
জন্মসূত্রে ইরানের মানুষ নাইম ইয়োসেফির চোখে ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি হল ভবিষ্যতের ‘জুতা আবিষ্কার': মুচির হাতুড়ি-ফর্মার বদলে কম্পিউটার আর প্রিন্টার দিয়ে তৈরি করা৷ নকশাটা করা হয়েছিল কম্পিউটারে৷ তারপর স্টকহোমের এক বিশেষজ্ঞ মিকায়েল এরিকসন সেই নকশা ‘অপটিমাইজ' করেন৷ একটি বিশেষ সফটওয়্যার জুতোর ডিজিটাল মডেলটিকে সিগনালে পরিণত করে, যা থেকে থ্রি-ডি প্রিন্টার ত্রিমাত্রিক মডেলটি তৈরি করে৷
জুতো ছাপার কাণ্ডকারখানা
ত্রিমাত্রিক মুদ্রণে অনেক সময় লাগে৷ একটি প্ল্যাটফর্ম ধীরে ধীরে নীচে নেমে যায়, কেননা তার উপর পরতে পরতে পাদুকাটি গড়ে ওঠে৷ প্রণালীটা ঠিক কাগজে ছাপার মতো: শুধু কালির বদলে তরল প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়৷ সেই প্লাস্টিক আবার একটি লেজার থেকে অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণে শুকোয় এবং শক্ত হয়ে ওঠে৷ স্তরে স্তরে ছাপা, খুব পাতলা সব স্তর, কাগজের চেয়েও পাতলা৷ মাত্র ১৬ মাইক্রন, অর্থাৎ এক মিলিমিটারের ষোলো হাজারের এক ভাগ৷ তা থেকে বোঝা যায়, একটা জুতো তৈরি করতে কেন চল্লিশ ঘণ্টা সময় লাগে৷ ও রকম একটা জুতো তৈরি করার খরচ হল দেড় হাজার ইউরো৷
আরো অনেক ফ্যাশান ডিজাইনার থ্রি-ডি প্রিন্টার নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন৷ নাইম ইয়োসেফি-র ‘মেলোনিয়া' মডেলটিকে নান মিউজিয়ামে দেখতে পাওয়া যাবে – যেমন লন্ডনের ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড অ্যালবার্ট মিউজিয়াম৷ ইয়োসেফি আপাতত একটি নতুন মডেলের জুতো নিয়ে কাজ করছেন৷ থ্রি-ডি প্রিন্টার থেকে ‘ছাপানো' এই ধরনের একজোড়া জুতো আজ বিক্রি হয় কয়েক হাজার ইউরো দামে৷ তবে ইয়োসেফি ভবিষ্যতে দাম কমানোর আশা রাখেন: ‘‘গ্রাহকরা যাতে এই ধরনের জুতো আরো সহজে কিনতে পারেন, আমি তার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি৷ তারা আমার দোকানে আসবেন, নিজেদের শরীর স্ক্যান করাবেন আর জুতো অথবা অ্যাক্সেসরির অর্ডার দেবেন৷ খুবই সোজা কাজ৷''