1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জুনে আসছে বানান পরীক্ষার অ্যাপ ‘সঠিক’

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২

অবশেষে অনলাইনে বাংলা বানান ও ব্যাকরণ ঠিক করার অ্যাপ ‘সঠিক’ আসছে এই জুনেই৷ এই অ্যাপের মাধ্যমে বাংলা বানান ও ব্যাকরণ শুদ্ধ করা যাবে৷

https://p.dw.com/p/47DLk
ফাইল ছবিছবি: bdnews24.com

সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (আইসিটি) বাংলা একাডেমির সহায়তায় এই অ্যাপের কাজ করছে, যা প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে৷

আইসিটি বাংলা ভাষা প্রকল্পের পরিচালক মো. মাহবুব করিম জানান, বাংলা অভিধান নিয়ে আরো কাজ হবে৷ এর মধ্যে শব্দার্থ, অনুবাদ এসব নিয়ে আলাদা প্রকল্পে কাজ হবে৷

তবে ‘সঠিক’ অ্যাপ আসার আগেই আইসিটি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এই ফেব্রুয়ারি মাসেই আসছে আরেকটি অ্যাপ৷ যার নাম হলো বাংলা সেন্টিমেন্ট অ্যানালাইসিস অ্যাপ৷ যে কারো বাংলা বক্তব্য অ্যানালাইসিস করে ওই অ্যাপ বলে দেবে তার মনের অবস্থা কী৷

বাংলা বানান ও ব্যাকরণ সঠিক করার অ্যাপটি নিয়ে ২০১৭ সালে আইসিটি বিভাগ কাজ শুরু করে৷ তবে এর কিছু কাঠামোগত সমস্যা থাকায় ব্যবহারকারীদের জন্য প্রকাশ করায় সময় লাগছে বলে মাহবুব করিম জানান৷ এটা নিয়ে নানা পর্যবেক্ষণ আছে৷ সেই পর্যবেক্ষণগুলো আমলে নিয়ে সংশোধন করা হচ্ছে৷ তবে এটা ব্যাবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করার পর আরেকটি প্রকল্পের মাধ্যমে এর পরবর্তী ধাপের উন্নয়ন নিয়ে কাজ হবে৷ তার কথায়, ‘‘ভাষায় অনেক পরিবর্তন আসে৷ সময়ের সাথে সেগুলো যেন সময়মত আপডেট করা যায় তার ব্যবস্থাও নেয়া হবে৷’’

বাংলা অ্যাপটিতে বাংলা একাডেমির বানান রীতি অনুসরণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি৷ কিন্তু বাংলা একাডেমি নিজে কোনো বাংলা অনলাইন অভিধান, বানান বা ব্যাকরণ নিয়ে কাজ করছে না৷ তারা আইসিটি বিভাগকে সহায়তা করছে৷ এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৪ সালে৷

বাংলা একাডেমির গবেষণা, সংকলন, অভিধান ও বিশ্বকোষ বিভাগের পরিচালক মো. মোবারক হোসেন জানান বাংলা একাডেমির অভিধান বিষয়ক মূল কাজ হলো আধুনিক বাংলা অভিধান৷ এটার নিয়মিত নতুন সংস্করণ বের হচ্ছে৷ এর বাইরে বাংলা থেকে ইংরেজি, ইংরেজি থেকে বাংলা, বাংলা বানান অভিধান, ব্যাকরণসহ আরো কিছু প্রকাশনা আছে অভিধান ও বিশ্বকোষ প্রকল্পে৷ অভিধান বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিক সর্বোচ্চ বিক্রিত বই৷

তবে বাংলা একাডেমির অনলাইন কোনো অভিধান নেই৷ একাডেমির ওয়েব সাইটে অভিধানের পিডিএফ লিংক পাওয়া গেলেও সেই লিংক খোলা যায় না বা সেখানে অভিধানের পিডিএফ সংস্করণটি নেই৷

মোবারক হোসেন জানান, ‘‘আইসিটি বিভাগ আমাদের আধুনিক বাংলা অভিধান পুরোটাই নিয়ে নিয়েছে৷ তারা অনলাইনে বাংলা বানানের যে অভিধান নিয়ে কাজ করছে সেখানে আমাদের অভিধানই ব্যবহার করা হচ্ছে৷  তাদের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে৷ আমাদের সাথে তারা নিয়মিত বৈঠকও করছেন৷’’

বাংলা একাডেমি নিজ উদ্যোগে বাংলার কোনো অনলাইন অভিধান করবে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এই বিষয়ে আমার কিছু জানা নাই৷ এটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ব্যাপার৷’’

এটা (অনলাইন অভিধান) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ব্যাপার: বাংলা একাডেমির মোবারক হোসেন

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানান, ‘‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ২০১৫ সালে অনলাইনে বাংলা অভিধান ও বানান পরীক্ষা করার একটি প্রকল্প হাতে নেয়৷ ২০১৭ সালে এটা একনেক অনুমোদন করে৷ সেই প্রকল্পটি এখন চলছে৷ বাংলা ভাষায় ১৬টি টুলস ডেভেলপ করার জন্য এই প্রকল্পটি নেয়া হয়৷ এটার জন্য সরকার অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে৷’’

তার মতে, এটা বেসরকারি পর্যায়ে বা বাণিজ্যিকভাবে করার সুযোগ নাই৷ বেসরকারি পর্যায়ে অর্থ ছাড়া কাজ করা যায় না৷ এটা বাণিজ্যিকভাবে করতে গেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক ট্রলের শিকার হতে হয়৷ কিন্তু টাকা আয় না হলে এটা বেকরকারিভাবে কীভাবে করা সম্ভব?

জানা গেছে এই ১৬টি টুলস-এর মধ্যে আছে ১. ইউনিকোড ও বাংলা বর্ণমালার কোড সেট বিবেচনায় রেখে বাংলা সর্টিং অর্ডার নির্ধারণ ২. উন্নয়ন বা সমৃদ্ধকরণ ৩. বাংলা বানান ও ব্যাকরণ পরীক্ষক উন্নয়ন ৪. বাংলা ভাষার টেক্সট টু স্পিচ ও স্পিচ টু টেক্সট সফটওয়্যার উন্নয়ন ৫. বাংলা ফন্ট কনভার্টার উন্নয়ন ৬. তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলার লিখিত রূপ নির্ধারণ ৭. বাংলা মেশিন ট্রান্সলেশন ৮. বাংলা স্ক্রিন রিডার সফটওয়্যার ৯. প্রতিবন্ধীদের জন্য সফটওয়্যার ১০. বাংলা ফন্ট এবং সফটওয়্যার অন্তর্ভুক্তিকরণ ১১. বাংলা ওসিআর উন্নয়ন প্রভৃতি৷

ডিকশনারির কাজ করে আমি ফেলে রেখেছি: মোস্তাফা জব্বার

আইসিটি বিভাগের এই প্রকল্পে এপর্যন্ত ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে৷

এদিক বাংলা বানানের জন্য দেশীয় কিছু ওয়েবসাইট এবং মোবাইল অ্যাপ আছে৷ কিন্তু তার অনেকগুলো এখন আর কার্যকর নেই৷ আর সেগুলো বাংলাভাষীদের চাহিদা পুরণ করতে পারছে না৷ ব্যবহার পদ্ধতিও বেশ জটিল৷

অনলাইন প্রকাশনা সংস্থা সিসটেকের এরকম বাংলা বানান পরীক্ষার একটি ওয়েবসাইট আছে৷

প্রতিষ্ঠানটির ডিজিটাল বিভাগের এমডি এম রাশিদুল হাসান জানান, ‘‘আমরা করেছি সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য৷ এটা ফ্রি এবং যে কেউ ব্যবহার করতে পারেন৷ এখানে বাংলা একাডেমির বানান অনুসরণ করা হয়েছে৷’’

তার কথা, ‘‘বেসরকারি উদ্যোগে বাংলার জন্য আমরা অনেক কিছু করতে চাইলেও নানা জটিলতায় তা পারা যায় না৷ এখন পর্যন্ত অনলাইনে বাংলায় ভালো একটি  স্পেলচেকার নাই৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য