সিঙ্গাপুরে শীর্ষ বৈঠকের প্রস্তুতি
৬ জুন ২০১৮ট্রাম্প-কিম বৈঠকের রূপরেখা ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷ আগামী ১২ই জুন সকালে সিঙ্গাপুরের দক্ষিণে সান্টোসা দ্বীপের কাপেলা হোটেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও উত্তর কোরিয়ার নেতার ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে৷ হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারা সান্ডার্স আরও জানিয়েছেন যে, প্রস্তুতি জোরকদমে চলছে এবং এখনো পর্যন্ত সবকিছু ভালোভাবেই এগোচ্ছে৷
দুই নেতার মধ্যে বর্তমান সৌজন্য সত্ত্বেও তাঁদের সাক্ষাতের ফলে কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি আসবে কিনা, সে বিষয়ে এখনো কোনো স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না৷ গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে কিম জং উনের দূতের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ট্রাম্প বলেন, তিনি ‘অত্যন্ত ইতিবাচক ফলাফল' আশা করছেন৷ তবে সিঙ্গাপুরে প্রথম সাক্ষাতেই বাজিমাত করা সম্ভব হবে, এমন প্রত্যাশা তিনিও করছেন না৷ বেশ কয়েকটি বৈঠকের পর কোনো বোঝাপড়া সম্ভব হতে পারে বলে তিনি মনে করেন৷ সিঙ্গাপুর বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ সালের কোরিয়া যুদ্ধ অবসান ঘোষণা করা হতে পারে৷ অর্থাৎ, উত্তর কোরিয়া অবিলম্বে পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করে দেবে, এখনই এমন সাফল্যের সম্ভাবনা অত্যন্ত কম৷
ট্রাম্প-কিম বৈঠকের আয়োজক হিসেবে সিঙ্গাপুর সে দেশে নিরাপত্তা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ আগামী ১০ থেকে ১৪ই জুন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মার্কিন দূতাবাস এলাকার জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ঘোষণা করেছে৷ এছাড়া সান্টোসা দ্বীপ সংলগ্ন এলাকাকে ঘিরেও নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হচ্ছে৷ বৈঠকের সময়ে সিঙ্গাপুরের আকাশসীমায় বিমানগুলিকে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে৷ পুলিশও অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে৷
এদিকে বৃহস্পতিবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন৷ উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কোনো সম্ভাব্য বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে জাপানের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংশয় যাতে উপেক্ষা না করা হয়, আবে তা নিশ্চিত করতে চান৷ আগামী নভেম্বর মাসে অ্যামেরিকায় মধ্যবর্তীকালীন নির্বাচনের আগে ট্রাম্প পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে নিজের সাফল্য তুলে ধরতে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে প্রায় যে কোনো মূল্যে চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারেন, জাপানে এমন আশঙ্কা রয়েছে৷ বিশেষ করে দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন সৈন্যসংখ্যা কমালে জাপান সমস্যায় পড়তে পারে৷
শীর্ষ বৈঠকের প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এখনো পর্যন্ত যথেষ্ট সংযম দেখিয়ে চলেছেন৷ পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ রেখে তিনি দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনীতির পথে অগ্রসর হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে যথেষ্ট সম্ভ্রম আদায় করেছেন৷ চীনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে তিনি নিজের স্বার্থও রক্ষা করে চলেছেন৷ সিঙ্গাপুর বৈঠকে তেমন কোনো সাফল্য অর্জন করা সম্ভব না হলেও কিম অদূর ভবিষ্যতে আবার একঘরে হয়ে পড়বেন না বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন৷