ট্রাম্প: ছোট মনের বড় ‘মাস্তান’
১৫ এপ্রিল ২০২০মার্কিন প্রেসিডেন্টের হঠকারী বক্তব্য বা একপেশে সিদ্ধান্তের ইতিহাস বেশ দীর্ঘ৷ এর আগে জলবায়ু পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্বশীল ভূমিকার প্রয়োজনীয়তা অগ্রাহ্য করে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন, পরমাণু চুক্তি বাতিল করে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র বিরোধ বাড়ানোতেও ভূমিকা রেখেছেন৷ তখন সমালোচনা হয়েছে, এখনো হচ্ছে৷ কিন্তু ডনাল্ড ট্রাম্প সমালোচনা থেকে শিক্ষা নিলে তো!
সবচেয়ে বেশি আর্থিক সহায়তা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকেই পায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)৷ গতবছর ডব্লিউএইচও-র মোট বাজেটের ১৫ শতাংশ (৪০০ মিলিয়ন ডলার) দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র৷
হঠাৎ পুরো অর্থায়ন বন্ধের ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প৷
ঘোষণাটা এলো এমন সময়ে যখন কিনা ১৮৫ টি দেশে মোট এক লাখ ২৬ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাসে৷ ডাব্লিউএইচও বলছে এখনো সবচেয়ে খারাপ সময়টা আসেনি, আরো সতর্ক না হলে, আরো জোরদার লড়াই না করলে সংক্রমণ ছড়াবে, মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হবে অনেক, ট্রাম্পের ঘোষণা এলো তখন৷
এমন নয় যে, ডাব্লিউএইচও সব কাজ ঠিক করেছে৷ গতবছর চীনে প্রথম যখন সংক্রমণ দেখা দেয়, ডাব্লিউএইচও সক্রিয় হলে সেই তথ্য সবার জানা হতো, সব দেশ সতর্ক হলে বিপর্যয় এতটা হয়তো হতো না৷
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন তা স্বীকার করেই ট্রাম্পের অর্থায়ন বন্ধের ঘোষণার সমালোচনা করেছেন৷
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্ব ব্যাংক, জাতিসংঘ, নোবেল কমিটি, ওপেক, ওআইসি, আইএমএফ- বলতে গেলে সবারই কিছু-না-কিছু বড় সমালোচনা আছে৷ ভালো কাজও আছে সবার৷ ডাব্লিউএইচও-র জন্য এটা ভালো কাজ দেখানোর সময়৷ এমন সময়ে বাগড়া দিয়ে, ‘শত্রুর’ ভূমিকায় নেমে কার উপকার করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প?
দেশে ট্রাম্প প্রশাসনের একেবারে লেজেগোবরে অবস্থা৷ শুরুতে করোনা ভাইরাসকে যথেষ্ট গুরুত্ব না দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্র এখন সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ৷ মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যে ২৮ হাজার ছাড়িয়েছে৷ ট্রাম্প নিজেও মনে করেন, সংখ্যাটা এক লাখ ছাড়াতে পারে৷ বেসামাল হয়ে, বড় দেশের ছোট মনের নেতা হয়ে সেই বিপর্যয় এড়াতে পারবেন না ট্রাম্প৷ দেশে ভোট বাড়তেও পারে, তবে সারা বিশ্বে তার প্রতি শ্রদ্ধা আরো কমবে৷