ডায়মন্ড হারবারে চোলাই মদের বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর মিছিল
১৫ ডিসেম্বর ২০১১
মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছিল বুধবার ভোরেই৷ তার আগের রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগণার ডায়মন্ড হারবার মহকুমার সংগ্রামপুরে চোলাই মদের বিষক্রিয়ায় বহু লোক অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং এক এক করে মৃত্যুর খবর আসতে থাকে৷ বুধবার রাত পর্যন্ত সরকারিভাবে ৫৭ জনের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়৷ কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মৃত্যুর হার দ্রুত বাড়তে থাকে৷ বিকেলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৪৫, কিন্তু গুরুতর অসুস্থ আরও অন্তত ১৫০ জন, যাদের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক৷ ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে৷ অসুস্থরা অধিকাংশই ভর্তি ডায়মন্ড হারবার মহকুমা হাসপাতালে৷ তবে কিছু লোককে কলকাতার হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়েছে৷ কলকাতার বাঙ্গুর হাসপাতালের সুপার সংবাদ মাধ্যমকে এসম্পর্কে জানিয়েছেন৷
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, নেশা বাড়ানোর জন্য চোলাই মদে অত্যধিক মাত্রায় মিথাইল অ্যালকোহল মেশানোতেই এই বিপত্তি৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বিধানসভায় জানান, মৃতরা যেহেতু সবাই খুব দরিদ্র পরিবারের লোক, তাদের মাথাপিছু দু লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে সরকার৷
বিষমদে মৃত্যুর ঘটনার পরই এদিন তৎপর হয়ে ওঠে জেলা প্রশাসন৷ দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগণার বিভিন্ন জায়গায় চোলাইয়ের ঠেক ভেঙে দেওয়া হয়৷ এর মধ্যে মগরাহাটে চোলাইয়ের ঠেক ভাঙতে গেলে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতাহাতি হয়৷ থানায় বিক্ষোভ হয়৷ যার থেকে স্পষ্ট, দক্ষিণ ২৪ পরগণার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে চোলাই মদের ব্যবসা কীভাবে বিরাট সংখ্যক নিম্নবিত্ত মানুষের জীবিকা হয়ে উঠেছে৷ যে কারণে এত বড় অঘটন ঘটে যাওয়ার পরেও শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় বৃহস্পতিবার দিনভর চোলাই মদ পাচারের কোনও বিরাম ঠিল না৷ উত্তর ২৪ পরগণার বসিরহাটে ৯টি মদের ঠেক ভেঙে দেওয়া হয়৷ গ্রেপ্তার হয় দুজন, নষ্ট করে দেওয়া হয় ৮০০০ লিটার চোলাই মদ৷
প্রতিবেদন: শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক