গাড়ি কোম্পানিগুলি বিপাকে
২৫ জুলাই ২০১৭‘মেড ইন জার্মানি' মানেই উচ্চ মানের পণ্য৷ তার জন্য বাড়তি দাম দিতেও গোটা বিশ্ব প্রস্তুত৷ কিন্তু সেই আস্থা ভেঙে গেলে রপ্তানিতে চ্যাম্পিয়ন এই দেশের কী হবে? জার্মানিতে এখন এমন আশঙ্কার কথাই বলছেন কিছু রাজনীতিক৷ কারণ ‘ডিজেলগেট' কেলেঙ্কারি ধীরে ধীরে মারাত্মক আকার ধারণ করছে৷ জার্মানির বেশ কয়েকটি বিশ্বখ্যাত গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানির বিরুদ্ধে গোপন বোঝাপড়ার অভিযোগ উঠেছে৷ বিশেষ করে ডিজেল-চালিত গাড়ির দূষণের প্রকৃত মাত্রা গোপন করতে তারা নাকি অনৈতিক কাজে লিপ্ত আছে৷ উল্লেখ্য, জার্মানিতে তৈরি ডিজেল গাড়ির সফটওয়্যারে কারচুপির ঘটনা অ্যামেরিকায় প্রথম ধরা পড়েছিল৷
এই কেলেঙ্কারির পরিণতি শুধু তাদেরই সামলাতে হবে না, জার্মানির গোটা শিল্পজগত এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে – এমন পূর্বাভাষ দিচ্ছেন কিছু বিশেষজ্ঞ৷ এর মধ্যেই পুঁজিবাজারে ফলক্সভাগেন, বিএমডাব্লিউ ও ডাইমলার কোম্পানির বিশাল দরপতন ঘটেছে৷
বিনিয়োগকারীদের আশঙ্কা, পরিস্থিতি সামলাতে এই কোম্পানিগুলিকে বিশাল মাত্রার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ও তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে৷ ফলে তাদের বিশাল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখ দেখতে হতে পারে৷
জার্মানির ‘ডেয়ার স্পিগেল' পত্রিকা গাড়ি কোম্পানিগুলির বিরুদ্ধে এই বিস্ফোরক অভিযোগ প্রকাশ করেছে৷ সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী ফলক্সভাগেন, আউডি, পর্শে, বিএমডাব্লিউ ও ডাইমলার কোম্পানি বেশ কয়েক বছর ধরে কিছু ক্ষেত্রে গোপন বোঝাপড়া চালিয়ে আসছে৷ প্রযুক্তির ব্যবহার, ব্যয়ের মাত্রা ও কোনো কোম্পানির কাছ থেকে যন্ত্রাংশ কেনা হবে – এমন সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তারা আগেভাগে স্থির করে রাখে৷ অর্থাৎ সুস্থ প্রতিযোগিতার বদলে অনৈতিক অথবা বেআইনি পথে তারা ব্যবসা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷
আগামী ২রা আগস্ট জার্মানির ফেডারেল ও রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে গাড়ি শিল্পের কর্তাব্যক্তিদের এক শীর্ষ বৈঠক হবার কথা৷ সেখানে এই অভিযোগ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ কোণঠাসা গাড়ি কোম্পানিগুলি তাদের বিক্রি করা ডিজেল গাড়িগুলিতে নতুন যন্ত্রাংশ বসানোর প্রস্তাব দেবে বলে জানিয়েছেন গাড়ি নির্মাতাদের কেন্দ্রীয় সংগঠনের সভাপতি৷ অর্থাৎ সাধারণ ক্রেতাদের আর্থিক ক্ষতি এড়াতে প্রস্তুত কোম্পানিগুলি৷ অন্যদিকে জার্মান ফেডারেল সরকার কিছু রাজ্য সরকারের সঙ্গে একযোগে গাড়ি কোম্পানিগুলির উপর দূষণের মাত্রা কমাতে চাপ দিতে চলেছে৷
জার্মানির গাড়ি কোম্পানিগুলির প্রতি সরকারের নরম মনোভাব নিয়ে প্রবল সমালোচনার ঝড় উঠেছে৷ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশানাল কোম্পানিগুলির এমন বেআইনি কার্যকলাপের জন্য আরও কড়া শাস্তির দাবি করছে৷ সেইসঙ্গে জরিমানার মাত্রা অনেক বাড়ানোর ডাক দিচ্ছে টিআই৷
এসবি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি)