ডিজেলচালিত গাড়ির ভবিষ্যৎ নিয়ে বৈঠক
২ আগস্ট ২০১৭মার্সিডিজ বেনৎস ও পোরশে গাড়ির শহর বলে পরিচিত জার্মানির স্টুটগার্টের একটি আদালত ইতিমধ্যে ডিজেলচালিত গাড়ির উপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে৷ শহরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখার খাতিরে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে আদালত৷
এই অবস্থায় ডিজেলচালিত গাড়ির ভবিষ্যৎ নিয়ে গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিগুলোর প্রধান ও জার্মান সরকারের মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ পেট্রোলচালিত গাড়ির চেয়ে ডিজেলচালিত গাড়ি কম কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত করে বলে জার্মান গাড়ি নির্মাতারা এই খাতে অনেক অর্থ বিনিয়োগ করেছে৷ তবে ডিজেল ইঞ্জিন থেকে বেশি পরিমাণে নাইট্রোজেন অক্সাইড বের হওয়ার খবরে জার্মান নাগরিকদের মধ্যেও এখন এর বিরোধিতা বেড়েছে৷ পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিসের এক জরিপে দেখা গেছে, ৫৭ শতাংশ জার্মান মনে করেন, যেসব শহরে বাতাস ততটা বিশুদ্ধ নয় সেসব শহরে এই গাড়ি চলাচল বন্ধ করা যেতে পারে৷
ডিজেল গাড়ির এই সমস্যার সমাধানে গাড়ি নির্মাতারা স্বেচ্ছায় ক্রেতাদের একটি সফটওয়্যার প্যাচ দিচ্ছেন৷ এর ফলে বায়ু দূষণের পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে বলে জানানো হচ্ছে৷ গাড়ি নির্মাতারা ইতিমধ্যে ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরির দিকে তাদের মনোযোগ দেয়া শুরু করেছেন৷ সেটি যতদিন পর্যন্ত না প্রত্যাশিত মাত্রায় পৌঁছাতে পারছে, ততদিন এভাবে সফটওয়্যার প্যাচ দিয়ে যেতে চায় গাড়ি নির্মাতারা৷ উল্লেখ্য, ফলক্সভাগেন কোম্পানি ২০২৫ সালের মধ্যে ইলেকট্রিক গাড়ি উৎপাদনে বিশ্বের সেরা হতে চায়৷
রাজনীতি
ডিজেল গাড়ি নিয়ে এই নেতিবাচক পরিস্থিতির শুরু ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে৷ সেই সময় ফলক্সভাগেন স্বীকার করে যে, তারা বিশ্বব্যাপী বিক্রি হওয়া লক্ষ লক্ষ গাড়িতে একটি অবৈধ ডিভাইস ইনস্টল করেছে, যেটা বায়ু দূষণের পরিমাণ কম দেখায়৷ এরপর একে একে মার্সিডিজ বেনৎস প্রস্তুতকারক ডাইমলার ও বিএমডাব্লিউও এমন প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত বলে জানা যায়৷
এ সব খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ডিজেলচালিত গাড়ি সম্পর্কে জনমনে নেতিবাচক মনোভাব দেখা দেয়৷ তবে গাড়ি নির্মাতাদের সঙ্গে রাজনীতিবিদদের সুসম্পর্ক থাকায় এবং জার্মানির রপ্তানি আয়ের একটি বড় অংশ গাড়ি শিল্প থেকে আসায় নির্মাতাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে সমালোচকদের অভিযোগ৷
জার্মানিতে আর মাস দুয়েকের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ তার আগে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে গাড়ি নির্মাতাদের বিরুদ্ধে সরকার ততটা কঠোর ব্যবস্থা নেবে না বলেই মনে করছেন অনেকে৷ বরং পরিস্থিতি সামাল দিতে একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে৷ দূষণ কমাতে সরকার ও গাড়ি নির্মাতারা মিলে ৫০০ মিলিয়ন ইউরোর একটি বিশেষ তহবিল গঠন করতে পারে বলে জানা গেছে৷
জেডএইচ/ডিজি (এএফপি)