তথ্যচিত্রে অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীরা
১৪ নভেম্বর ২০১৩পৃথিবীতে অন্য কোনো জনগোষ্ঠীর প্রায় ৪০,০০০ বছরের ইতিহাস নেই, যেমনটা অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী ‘অ্যাবোরিজিনাল'-র ক্ষেত্রে প্রজোয্য৷ শ্বেতাঙ্গ জবরদখলকারীরা তাদের দেশে এসে তাদের প্রতি অনেক অন্যায় করেছে৷ কয়েক বছর আগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কেভিন রাড সংসদে দাঁড়িয়ে সরকারের হয়ে ‘অ্যাবোরিজিনাল'-র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন৷ কিন্তু তাদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে কি?
সম্প্রতি একটি তথ্যচিত্র অস্ট্রেলিয়ার ‘অ্যাবোরিজিনাল' আদিবাসীদের বর্তমান অবস্থার একটা ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে৷ ছবির নাম ‘ইউটোপিয়া'৷ না, কোনো আদর্শ কাল্পনিক স্বর্গরাজ্যের স্বপ্ন নয় – সাংবাদিক জন পিলগার যে তথ্যচিত্রটি তৈরি করেছেন, তার প্রেক্ষাপট অস্ট্রেলিয়ার উত্তরে একই নামের একটি অঞ্চল৷ সেখানকার পরিস্থিতি স্বর্গ নয়, নরকের মতো৷ শুষ্ক এই এলাকায় অত্যন্ত কঠিন অবস্থায় বসবাস করতে হয় আদিবাসীদের৷ বাড়িঘর অ্যাসবেস্টস দিয়ে তৈরি৷ অসুখ-বিসুখ লেগেই রয়েছে৷ অপরাধের রেকর্ড মাত্রা৷ দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবৈষম্যের যুগে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের ক্ষেত্রে অপরাধের যে হার ছিল, ইউটোপিয়া-য় তার মাত্রা তারও আট গুণ বেশি! পুরুষদের গড় আয়ু মাত্র ৩৭ বছর৷
শুধু তাই নয়, তথ্যচিত্রে অস্ট্রেলিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে শুধু ব্যর্থতা নয়, পরোক্ষ বর্ণবৈষম্যের অভিযোগও আনা হয়েছে৷ তবে যে সব রাজনীতিকের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে, তাঁরা সবাই আত্মতুষ্টিতে ভুগছেন৷ আদিবাসীদের সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে সরকার নাকি যা যা সম্ভব, সবই করেছে৷ অথচ অস্ট্রেলিয়ার সরকার ‘অ্যাবোরিজিনাল' সমাজের উপর যেভাবে হস্তক্ষেপ করে, জাতিসংঘও তার সমালোচনা করে আসছে৷
পিলগার অবশ্য এমন যুক্তি মানতে রাজি নন৷ তিনি ১৯৮০-র দশক থেকে ‘অ্যাবোরিজিনাল'-দের দারিদ্র্যের সমস্যা তুলে ধরে আসছেন৷ শুধু রাজনীতিক নয়, বড় বড় মাইনিং কোম্পানি এবং সাধারণ মানুষকেও এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেন তিনি৷ তাঁর মতে, এটা একটা লজ্জাজনক জাতীয় ‘সিক্রেট'৷
গত প্রায় চার দশক ধরে জন পিলগার বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সমস্যা তুলে ধরে চলেছেন৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স, এপি)