তাইওয়ানে যেভাবে করোনা নিয়ন্ত্রিত
১২ মার্চ ২০২০গত বছর ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর বিশ্বজুড়ে এক লাখ ২৬ হাজারের বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন, মারা গেছেন সাড়ে চার হাজারের বেশি মানুষ৷
উহানে করোনা প্রাদুর্ভাবের পর বলা হয়েছিল, চীনের মূলভূখণ্ডের বাইরে তাইওয়ানে এই ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হবে৷ অথচ চীনে ৮০ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হলেও তাইওয়ানে এই সংখ্যা এখনো পঞ্চাশের নিচে৷
‘পাবলিক হেল্থ পলিসি’ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞ ডা. জেসন ওয়াং বলেন, তাইওয়ান সম্ভাব্য সংকটের ভয়াবহতা আগেই বুঝতে পেরেছিল এবং ভাইরাসের চেয়ে এগিয়ে থাকতে সক্ষম হয়েছে৷
বলেন, ‘‘২০০২ ও ২০০৩ সালে সার্স ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর তাইওয়ান ন্যাশনাল হেল্থ কমান্ড সেন্টার (এনএইচসিসি) গঠন করে পরবর্তী সংকট মোকাবেলায় প্রস্তুত হয়েই ছিল৷’’
উহানে করোনা প্রাদুর্ভাবের পরপরই তাইওয়ান সরকার চীনের মূলভূখণ্ড ছাড়াও হংকং, ও ম্যাকাওর উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে৷ এছাড়া ওই সময় সরকার সার্জিক্যাল মাস্ক রপ্তানি নিষিদ্ধ করে, যেন তাদের মজুদে সংকট দেখা না দেয়৷
এছাড়া তাইওয়ান সরকার ন্যাশনাল হেল্থ ইনসুরেন্স এবং ইমিগ্রেশন ও কাস্টম বিভাগ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে সেগুলো সমন্বয় করে৷ এরমাধ্যমে তারা জনগণের ভ্রমণের তথ্য নিয়ে শুরুতেই সম্ভাব্য রোগীদের শনাক্ত করে ফেলে৷
তাইওয়ানে যারা ভ্রমণ করেছেন তাদের জন্যও একটি প্রোগ্রাম চালু করা হয়৷ সেখানে একটি ‘কিউআর কোড' স্ক্যান করে ভ্রমণকারীরা তাদের ভ্রমণের ও অসুস্থতার লক্ষণ সম্পর্কে তথ্য দিতে পারে৷ তারপর ভ্রমণকারীদের কাছে তাদের স্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থা নিয়ে একটি ম্যাসেজ যায়৷ এভাবে কাস্টম কর্মকর্তারা নিম্ন ঝুঁকির ভ্রমণকারীদের ছেড়ে দিয়ে উচ্চ ঝুঁকিতে থাকাদের পরীক্ষায় অধিক গুরুত্ব দিতে পেরেছেন৷
ওয়াং বলেন,‘‘নতুন নতুন প্রযুক্তি যথাযথভাবে ব্যবহার করে তাইওয়ান সরকার অনেক কিছু করতে সক্ষম হয়েছে৷ এর মাধ্যমে তারা লোকজনের জরুরি প্রয়োজন বুঝে সে অনুযায়ী সেবা দিতে সক্ষম হয়েছে৷''
জনগণ স্বেচ্ছায় সরকারের নির্দেশ অনুসরণ করাও এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছে বলে মনে করেন ওয়াং৷
তিনি বলেন, ‘‘সার্স ভাইরাসের সময় তাইওয়ানের বেশিরভাগ মানুষকে তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে৷ তাদের ওই স্মৃতি এখনো তাজা, যা তাদের করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করেছে৷
তারা ঐক্যবদ্ধ থেকে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সরকারের নেওয়া সব ব্যবস্থা নিষ্ঠার সঙ্গে মেনে চলেছে৷''
এসএনএল/কেএম