‘তালেবান’ আতঙ্কে আফগান নারীরা
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১২আফগানিস্তানে তালেবান শাসনামলে নারীদের বাইরে বের হওয়াটা ছিলো অনেকটাই কঠিন৷ মেয়েদের স্কুলে যাওয়ারও কোন সুযোগ ছিলো না৷ ফাওজিয়া কুফি সবসময় স্বপ্ন দেখতেন একদিন তিনি নিজের ইচ্ছেমত বাইরে ঘোরাফেরা করার সুযোগ পাবেন৷ তার সেই স্বপ্ন সত্যিও হয়েছে৷ আফগানিস্তানে মার্কিন হামলার পর তালেবান শাসনামলের অবসান ঘটে৷ অন্তত ঘরে বসে থাকা থেকে মুক্তি পায় নারীরা৷ মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার সুযোগ হয়৷ তালেবান আমলে বোরকার মধ্যে আটকে থাকার সেই দিনগুলোর কথা মনে করে কুফি বলেন, ‘‘সেটা ছিলো ছোট একটা জানালার মধ্য দিয়ে গোটা জগতকে দেখার মত, অন্তত মেয়েদের জীবনটা সেরকমই ছিলো৷''
আফগানিস্তানে এখন ২৭ লাখ মেয়ে স্কুলে যায়, যেটা তালেবান আমলে ছিলো মাত্র পাঁচ হাজারের মত৷ নারীরা এখন সংসদ নির্বাচনেও অংশ নিচ্ছেন৷ আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী নারী রাজনীতিক ফাওজিয়া কুফি৷ উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে বর্তমান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের বর্তমান মেয়াদ শেষ হচ্ছে৷ আর সেই বছরের শেষ নাগাদ আফগানিস্তান ছাড়বে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিদেশী বাহিনীগুলো৷ তাদের বিদায়ের পর আফগানিস্তানে আবারও পুরনো দিনগুলো ফিরে আসার আশঙ্কা করছেন কুফি৷ বিদেশী বাহিনীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা আফগানিস্তানে এসেছেন একটি লক্ষ্য নিয়ে যা হলো দেশটিতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা৷ আমাদের উচিত দেশটিতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাতে দেশটি আবার সন্ত্রাসের খপ্পড়ে না পড়ে৷''
তালেবান গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বরাবরই সোচ্চার ছিলেন আফগান সংসদের অন্যতম নারী সদস্য ফাওজিয়া কুফি৷ তিনি চান না তালেবান গোষ্ঠী আবার ফিরে আসুক, তাহলে নারীদের জন্য সেটা হবে দুঃসংবাদ৷ তিনি বলেন, ‘‘তালেবান আমাকে মারার জন্য করে বেশ কয়েকবার হামলা করেছে৷ আমি তাদের অন্যতম লক্ষ্য৷ কিন্তু এরপরও আমাদের-আফগানিস্তানের নারী অধিকার কর্মীদের থামানো যাবে না৷'' ফাওজিয়া কুফি এমন আফগানিস্তানের স্বপ্ন দেখেন, যেখানে মেয়েরা স্বচ্ছন্দে স্কুলে যেতে পারবে, পড়াশোনা শেষে ডাক্তার - প্রকৌশলী হয়ে কাজ করবে৷ তবে আফগানিস্তানের জটিল রাজনৈতিক সমীকরণে তা কতটা বাস্তব, সময়ই সেটা বলে দেবে৷
প্রতিবেদন: জাক বাদোর্ফ/আরআই
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন