1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আবারও তিরস্কৃত তৃণমূল

শীর্ষ বন্দোপাধ্যায়, কলকাতা১১ এপ্রিল ২০১৪

ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গে জনগণ কি আদৌ নিরাপদ? কারণ এবার পাড়ুই হত্যাকাণ্ড মামলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে কটাক্ষ করে প্রশ্ন করেছেন স্বয়ং বিচারপতি!

https://p.dw.com/p/1Bfpl
Prämierministerin Mamta Banerjee besucht das Dorf Nandigram, West Bengalen, Indien
ছবি: DW

শুক্রবার রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলকে আদালতে জরুরি তলব করা হলো৷ তাঁকে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের এজলাসে দাঁড়িয়ে সর্বসমক্ষে জানাতে হবে, পাড়ুই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত, তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডলকে কেন এখনও গ্রেপ্তার করতে পারল না পুলিশ! এই জবাবদিহি করতে হবে প্রকাশ্য শুনানিতে, মানে বহিরাগত দর্শক এবং সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও আদালতে হাজির থেকে শুনতে পারবেন ডিজি-র সাফাই৷

পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার জন্য প্রশাসনকে তিরস্কারের যেটুকু বাকি ছিল হাইকোর্টে, তা এদিন আগেই হয়ে যায়৷ প্রায় এক ঘণ্টার শুনানিতে বিচারপতি বারবার বিরূপ মন্তব্য করেন পুলিশি ব্যর্থতা এবং পাড়ুই হত্যা মামলায় শাসকদলের রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো নিয়ে৷ আগের দিনই তৃণমূলের এক নির্বাচনি প্রচার সভায় দলীয় নেত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পাশে পাশে নির্ভয়ে ঘুরতে দেখা গিয়েছে অনুব্রত মন্ডলকে৷ সেই নিয়ে সংবাদমাধ্যমে সাড়া পড়ে যাওয়ায়, বিশেষ করে সভায় উপস্থিত টিভি চ্যানেলগুলো বার বার সেই ছবি দেখাতে থাকায় মুখ্যমন্ত্রী অনুব্রত মন্ডলের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘কেউ কি তোর কাছে কিছু চেয়েছিল, যেটা তুই দিসনি? সেইজন্যে ওরা তোর পিছনে পড়ে গেছে? যাক গে, ওদের কিছু দিয়ে দিস৷ ঘরে মুড়ি-নারকেল যা থাকে দিয়ে দিস!''

রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের এই ব্যাঙ্গ-বিদ্রূপ স্বাভাবিকভাবেই বৃহস্পতিবার সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়েছে৷ সেদিকে ইঙ্গিত করে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এদিন সরকারি আইনজীবীকে বলেন, সকালের কাগজ দেখেছেন? আপনার কী মনে হয়, এই রাজ্যে আমরা কি নিরাপদ? বিচারপতি দত্ত আরও বলেন, অভিযুক্ত যদি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ঘুরে বেড়ায়, আপনাদের ডিজি-র কি সাধ্য হবে, তাকে ধরার? শুক্রবার আদালতে সর্বসমক্ষে রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে এই প্রশ্নের জবাবই দিতে হবে৷

উল্লেখ্য, বীরভূম জেলার পাড়ুই থানা এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন সাগর ঘোষ নামে এক দলত্যাগী তৃণমূল কর্মীর ছেলে হৃদয় ঘোষ৷ তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডল ভোটের প্রচারে গিয়ে ওই এলাকায় বলে আসেন, কোনো নির্দল প্রার্থী ভোট দেওয়ার জন্য চাপ দিলে তার বাড়িতে বোমা মারুন, বাড়ি জ্বালিয়ে দিন! যদি পুলিশ বাধা দিতে আসে, পুলিশকে বোমা মারুন! এই উত্তেজক ভাষণের চারদিনের মাথায় সাগর ঘোষকে তাঁর বাড়িতে গুলি করে মারা হয়৷ কিন্তু প্ররোচনা দেওয়ার দায়ে অভিযুক্ত হয়েও পুলিশের হাতে অধরা থেকে যান অনুব্রত মন্ডল৷ বরং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে দরাজ গলায় তাঁকে সার্টিফিকেট দেন, অনুব্রত খুব ভালো ছেলে৷ ও মাঝে মাঝে ওরকম বলে ফেলে!

এদিকে তৃণমূল কর্মীরা এদিন ফের বিরোধে জড়ালেন নির্বাচন কমিশনের এক প্রতিনিধির সঙ্গে৷ এবারের নির্বাচনে মোটরবাইক মিছিল নিষিদ্ধ করেছে নির্বাচন কমিশন৷ মালদহের মানিকচকে সেই বিধি অগ্রাহ্য করে মোটরবাইক মিছিল হচ্ছিল, যার ছবি তুলে রাখছিলেন নির্বাচন কমিশনের এক কর্মী৷ সেই দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই কর্মীর উপর চড়াও হন তৃণমূল কর্মীরা৷ তাঁকে মারধর করা হয়, ভেঙে দেওয়া হয় তাঁর ক্যামেরাটি৷ মানিকচকের তৃণমূল প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেনের সামনেই এই ঘটনা ঘটে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য