থাইল্যান্ডে ‘চূড়ান্ত লড়াই’
৯ মে ২০১৪পুলিশের সঙ্গে থাইল্যান্ডে সরকার পতনের ‘চূড়ান্ত লড়াই’ এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন ৬ জন৷ বুধবার থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত জানায়, ২০১১ সালে এক ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তার বদলিতে ইংলাকের ক্ষমতার অপব্যবহার করার প্রমাণ পাওয়া গেছে৷ নয় সদস্যের আদালত ইংলাকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পাওয়ায় তাঁকে সর্বসম্মতিক্রমে দোষী সাব্যস্ত করে৷ আদালতের এই রায়ের ফলে পুয়েয়া থাই পার্টির বর্তমান প্রধান ইংলাক সিনাওয়াত্রা আইনগতভাবে ক্ষমতায় থাকার অধিকার হারান৷
ইংলাকের বিরুদ্ধে এ রায় ঘোষণার দু'দিন পরই সরকার পতনের দাবিতে আবার জোর বিক্ষোভ শুরু করেছে বিরোধীরা৷ বিক্ষোভকারীরা কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল কার্যালয় ঘিরে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকে৷ সরকার সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষের আশঙ্কা এড়াতে পুলিশ অভিযান চালালে শুরু হয় সংঘর্ষ৷
এক বৌদ্ধ ভিক্ষুর নেতৃত্বে ব্যাংককের এক পুলিশ স্টেশনেও ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা৷ পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে তাদের হঠিয়ে দেয়৷ তবে বিক্ষোভ এখনো থামেনি৷ পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ছয়জন আহত হয়েছেন বলে বার্তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে৷ শনিবার ব্যাংককে পুয়েয়া থাই পার্টিরও সমাবেশ হওয়ার কথা৷ তখন ইংলাক সমর্থকদের সঙ্গে বিরোধীদের বড় রকমের সংঘর্ষ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
থাইল্যান্ডে প্রায় ছয় মাস ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে৷ দুর্নীতি এবং দেশান্তরী সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার ‘পুতুল সরকার' হয়ে দেশ পরিচালনার অভিযোগে ইংলাকের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামে বিরোধীরা৷ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ এবং ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত অন্তত ২৫ জন মারা গেছেন৷
বিরোধীদের আরেকটি দাবি ছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন৷ কিন্তু ইংলাক সেই দাবি অগ্রাহ্য করে নির্বাচন দেন৷ সেই নির্বাচনে তাঁর দলই জয়ী হয়৷ কিন্তু থাইল্যান্ডের আদালত বিরোধীদের আন্দোলনের কারণে বিঘ্নিত এ নির্বাচনের ফলাফলকে অকার্যকর ঘোষণা করে৷ নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও গঠন করা হয়৷ বিরোধীরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের পদে ইংলাককে মেনে না নেয়ায় তারপরও অচলাবস্থা কাটেনি৷
আদালতের রায়ে ইংলাক দোষী সাব্যস্ত ইংলাকের আগে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত থাইল্যান্ডের সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী তাঁর বড় ভাই থাকসিন সিনাওয়াত্রা৷ ২০০৬ সালে দুর্নীতির অভিযোগে সরকারবিরোধী আন্দোলনের মুখে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যূত হয়ে তিনি দেশ ছাড়েন৷ ২০১১ সালে দেশটির ২৮তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ইংলাক সিনাওয়াত্রা৷ মাত্র তিন বছরের মধ্যে আদালতের রায়ে তিনিও ক্ষমতায় থাকার অধিকার হারালেন৷
এসিবি/জেডএইচ (এপি, এএফপি)