ডিজেলগেট কেলেঙ্কারির ধাক্কা
৮ আগস্ট ২০১৭জার্মানির লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যের বিধানসভার এক অখ্যাত সদস্য আচমকা দলবদল করায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালো রাজ্য সরকার৷ সেইসঙ্গে ‘ডিজেলগেট' কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়ে পড়ায় বেশ কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্টেফান ভাইল৷ পদত্যাগের ডাকের মুখে তড়িঘড়ি করে আগাম নির্বাচন ডাকলেন তিনি৷ আগামী জানুয়ারি মাসেই রাজ্য সরকারের মেয়াদ শেষ হতো৷ জার্মান নির্বাচনের ঠিক আগে এমন এক ঘটনার প্রেক্ষিতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের আচরণ ও অধিকার নিয়ে জোরালো তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়েছে৷
জার্মানির ফেডারেল ও রাজ্য স্তরে সাধারণত জোট সরকার গঠিত হয়৷ বাভেরিয়া ছাড়া অন্য কোনো রাজ্যে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সহজে সরকার গড়ার ঘটনা বিরল৷ লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যে সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দল সবুজ দলের সঙ্গে সরকার গড়েছিল৷ তবে রাজ্য বিধানসভায় মাত্র এক জন বাড়তি সদস্যের বলে সেই সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় রেখেছিল৷ এবার জোটসঙ্গী সবুজ দলের এক সদস্য আচমকা দলত্যাগ করে বিরোধী সিডিইউ দলে যোগ দেওয়ায় সরকার সেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালো৷
লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যে গাড়ি নির্মাতা ফলক্সভাগেন কোম্পানির সদর দপ্তর৷ সেই সংস্থার পরিচালনার প্রক্রিয়ায় রাজ্য সরকারেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে৷ আজকের ‘ডিজেলগেট' কেলেঙ্কারির অশনি সংকেত এই কোম্পানির আচরণেই পাওয়া গিয়েছিল৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফলক্সভাগেন কোম্পানির ডিজেল গাড়ির সফটওয়্যারে কারচুপির প্রমাণ ধরা পড়ে৷ তা সত্ত্বেও ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে এক ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী ফলক্সভাগেনের চাপে এ বিষয়ে নরম সুরে কথা বলেন বলে অভিযোগ উঠেছে৷ বিরোধী সিডিইউ দল তাঁর পদত্যাগের ডাক দিয়েছে৷
এই অবস্থায় আগামী ১৫ই অক্টোবর আগাম নির্বাচনের ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী স্টেফান ভাইল৷ অর্থাৎ ২৪শে সেপ্টেম্বর জার্মান সংসদ নির্বাচনের ঠিক পরেই জার্মানির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের এই নির্বাচন রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে দিতে পারে৷ চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেল চতুর্থবার সরকার গড়তে পারলে এবং তাঁর দল লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যের নির্বাচনে জয়লাভ করলে সংসদের উচ্চ কক্ষে ম্যার্কেল-এর ইউনিয়ন শিবিরের ক্ষমতা আরও বেড়ে যাবে৷ উল্লেখ্য, জনমত সমীক্ষায় ফেডারেল ও লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যে এগিয়ে রয়েছে সিডিইউ দল৷
সবুজ দলের যে সদস্যের দলবদলের কারণে লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যের সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালো, সেই এলকে টভেস্টেন-এর আচরণ নিয়েও তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে৷ এক দলের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে নিজের আসন নিয়ে তিনি আদৌ অন্য এক দলে যোগ দিতে পারেন কিনা, সেই প্রশ্ন উঠে আসছে৷ এমন আচরণে আইনি ত্রুটি না থাকলেও নৈতিকতার বিষয়টি উঠে আসছে৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স, ডিপিএ)