গণধর্ষণের আসামিরা দোষী
১০ সেপ্টেম্বর ২০১৩গোটা দেশ তাকিয়ে ছিল দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডের রায় এবং আসামিদের শাস্তিদানের দিকে৷ দিল্লির ফাস্ট-ট্র্যাক কোর্ট চারজন আসামিকেই ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে দোষী বলে রায় দেন৷ এই অপরাধে তাঁদের কী শাস্তি হবে, তা ঘোষণা করা হবে বুধবার ১১ই সেপ্টেম্বর৷ অপরাধের গুরুত্বের প্রেক্ষিতে নির্ভয়ার পরিবার এবং নাগরিক সমাজের একাংশ চাইছে দোষীদের মৃত্যুদণ্ড৷ এই নিয়ে জাতীয় বিতর্কের পর অপরাধ আইন সংশোধনী বিল পাশ হয়৷ তাতে মৃত্যু দণ্ডের বিধান রাখা হয়৷ গত বছরের ১৬ই ডিসেম্বর রাতে দিল্লিতে এক চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার হন ২৩ বছরের প্যারা-মেডিক্যাল ছাত্রী নির্ভয়া৷ ধর্ষণের পর ধর্ষকরা নির্ভয়া ও তাঁর পুরুষ বন্ধুকে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়৷
এই মামলায় আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করতে মোট শুনানি হয় ১৩০ বার৷ মোট ৮৫ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়৷ আসামিদের পক্ষে সাক্ষ্য দেন মোট ১৭জন৷ মোট ৬ জন অভিযুক্তর মধ্যে একজন নাবালক ছিল বলে তার বিচার হয় জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে৷ বিচারে তাকে তিন বছর সংশোধনাগারে আটক রাখার আদেশ দেয়া হয়৷ আরেক জন আসামি রাম সিং জেলে থাকাকালীন আত্মহত্যা করে৷ অবশিষ্ট চারজন আসামি হলো, মুকেশ সিং, বিনয় শর্মা, পবন গুপ্ত এবং অক্ষয় ঠাকুর৷
পুলিশের তরফে অপরাধের সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসেবে পেশ করা হয়েছিল হাসপাতালে দেয়া নির্ভয়ার শেষ জবানবন্দি, ধর্ষণ কাণ্ডের সময় নির্ভয়ার সঙ্গে তাঁর যে পুরুষ বন্ধু ছিলেন, তাঁর দেয়া খুঁটিনাটি বিবরণ, আসামিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা রক্তের দাগ লাগা জামা কাপড়ের ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট যা নির্ভয়ার ডিএনএর সঙ্গে মিলে যায় এবং মেডিক্যাল ও ফরেনসিক রিপোর্ট৷ এছাড়া নির্ভয়ার পুরুষ বন্ধু আসামিদের প্রত্যেককে শনাক্ত করেন৷ সিঙ্গাপুরে যে হাসপাতালে নির্ভয়াকে নিয়ে যাওয়া হয় এবং যেখানে ২৯শে ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়, সেই হাসপাতালের ডাক্তারদের ভিডিও-কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে দেয়া বিবৃতি এবং নির্ভয়ার দেহকোষ ও টিস্যুর নমুনার স্লাইড৷
আসামিপক্ষে সওয়াল করা হয় যে, একজন ছিল বাসের ড্রাইভার৷ সে বাস চালাচ্ছিল৷ বাসের সিট থেকে ওঠেনি৷ ড্রাইভারের কেবিন বন্ধ থাকে, তাই ভেতরে কী হয়েছিল সে জানে না৷ কাজেই সে নির্দোষ৷ অপর দুজন আত্মপক্ষ সমর্থনে বলে, তাঁরা ঐ দিন অন্য জায়গায় গান শুনতে গিয়েছিল৷ পুলিশ তাঁদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে৷ চতুর্থ জন জানায়, সে ঐ দিন দিল্লির বাসে ছিলনা, গিয়েছিল বিহারে তাঁর গ্রামের বাড়িতে৷ আসামিপক্ষের উকিল এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে যাবার কথা বলেন৷