ভার্মা কমিটির রিপোর্ট
২৪ জানুয়ারি ২০১৩দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডের ২৯ দিনের মাথায় ৬৩০ পাতার রিপোর্ট দিলেন তিন সদস্যের বিচারপতি ভার্মা কমিটি৷ গণধর্ষণের নৃশংসতার প্রেক্ষিতে, দেশে প্রচলিত যৌন অত্যাচার সংক্রান্ত আইন খতিয়ে দেখে যৌন অপরাধ সংক্রান্ত আইনের কিছু সংশোধনের সুপারিশ করা হয়েছে এতে৷ বলা হয়েছে, আইন কঠোর করলেই হবে না, তার উপযুক্ত প্রয়োগ হওয়া জরুরি৷ আর তার জন্য দরকার প্রশাসনিক দক্ষতা৷ প্রশসনিক ব্যর্থতাই এই ঘটনার মূল কারণ৷
দিল্লি গণধর্ষণ-কাণ্ডের জন্য প্রশাসনিক ব্যর্থতাকে সরাসরি দায়ী করে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ভার্মা বলেন, ‘‘আমি স্তম্ভিত, যখন দেখি পুলিশ কমিশনারের কাজের প্রশংসা করে তাঁর পিঠ চাপড়ান খোদ স্বরাষ্ট্র সচিব৷ কমিটির কাছে ৮০ হাজারের মতো প্রস্তাব আসে, কিন্তু কোনো পুলিশ মহাঅধিকর্তা তাতে সাড়া দেনি৷ কোনো সুপারিশ পাঠান নি৷''
বলা হয়েছে, কমিটি ধর্ষণের অপরাধে ফাঁসি বা অঙ্গহানি অর্থাৎ ক্যাস্ট্রেশনের কোনো সুপারিশ করেননি৷ কারণ, অঙ্গহানি সংবিধান বিরোধী৷ তবে ধর্ষণের অপরাধে শাস্তি কঠোর করতে কমপক্ষে ২০ বছর জেল এবং ধর্ষণ ও খুনের অপরাধে যাবজ্জীবন কারাবাসের সুপারিশ করা হয়েছে৷ পুলিশকে মহিলাদের প্রতি আরো সংবেদনশীল হতে হবে৷ ব্যক্তিকে ব্যক্তি হিসেবে না দেখে পুরুষ বা মহিলা হিসেবে দেখা অর্থাৎ লিঙ্গভেদের বিষয়টি মহিলাদের প্রতি অবিচারের একটি দিক৷ তাই রিপোর্ট বলা হয়েছে, যৌন হয়রানি সংক্রান্ত সব মামলা মহিলা বিচারককে দিয়ে করাতে হবে৷
সমাজবিজ্ঞানী দেবদাস ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘ফাঁসির সংস্থান না থাকাটা ভালো৷ কারণ, এই ইস্যু নিয়ে আবারো বিতর্ক শুরু হতে পারে৷ দেখা দরকার কনভিকশন রেট কম কেন৷ শাস্তির মাত্রাটা বাড়িয়ে দিলাম, কনভিকশন অর্থাৎ দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার বাড়লো না, তাতে বিশেষ লাভ হবে না৷''
ধর্ষণ-কাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে দেশের যুবসমাজ যেভাবে এগিয়ে এসেছে, তার প্রশংসা করে বিচারপতি ভার্মা বলেন, ‘‘এইভাবে এগিয়ে না এলে দেশের বিবেক জাগ্রত হতো না৷ যুবসমাজ পথ দেখিয়েছে আইনের শাসন কীভাবে আসতে পারে৷''
এদিকে, মহারাষ্ট্রে মহিলাদের আত্মরক্ষার জন্য শিবসেনা দল মহিলাদের হাতে তুলে দিচ্ছে ছুরি, ক্ষুর ও অন্যান্য অস্ত্র৷ অন্যদিকে, রিপোর্টে কমিটি তাঁর এক্তিয়ার ছাড়িয়ে গেছেন বলে সরকারি সূত্রে মতপ্রকাশ করা হয়েছে৷ তবে বামদল রিপোর্টটিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, সংসদের আগামী অধিবেশনে ধর্ষণ সংক্রান্ত সংশোধিত আইনটি পাশ করাতে হবে৷