আটক কিশোরী
২৪ আগস্ট ২০১২পাকিস্তানের ইসলামাবাদের একটি এলাকা থেকে সপ্তাহখানেক আগে আটক করা হয় রিমশা মাসিহ নামের মেয়েটিকে৷ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, মেয়েটি পবিত্র কোরানের বাণী সম্বলিত কাগজ পুড়িয়েছিল৷ এরপর তার ওপর স্থানীয় লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে৷ পরে পুলিশ তাকে আটক করে৷ বর্তমানে সে রাওয়ালপিন্ডির একটি জেলে আটক অবস্থায় আছে৷
এই ঘটনার পর মানসিকভাবে মেয়েটি বেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে৷ জাভিয়ের উইলিয়াম নামে এক সহমর্মী বৃহস্পতিবার রিমশাকে দেখতে যান৷ এরপর তিনি জানান, মেয়েটি প্রচণ্ড ভয় পেয়েছে এবং মানসিকভাবেও বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে৷ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে উইলিয়াম জানান যে, রিমশার চেহারায় এবং হাতে মারের দাগ রয়েছে৷ এই অবস্থাতে অপ্রাপ্তবয়স্ক এই মেয়েটির সার্বিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে৷
মেয়েটির বয়স নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজাল৷ স্থানীয় গির্জায় নিবন্ধনের কাগজপত্র থেকে দেখা যায় তার বয়স মাত্র ১১৷ কিন্তু পুলিশ দাবি করছে তার বয়স ১৬৷ তার বয়স খতিয়ে দেখার জন্য রিমশার আইনজীবীরা আদালতের দ্বারস্থ হবেন, এমন তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি৷ তবে সমস্যা হলো আইনজীবীরা এখনও তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন নি৷
রিমশার আইনজীবী তাহির নাভিদ চৌধুরী জানান যে, তিনি মেয়েটির সঙ্গে দেখা করার জন্য চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত সফল হতে পারেন নি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজে কারাগারের মহাপরিদর্শককে টেলিফোন করেছি৷ তিনি আমাকে টেলিফোন করবেন বললেও সেটা করেন নি৷ আমি এখনও অপেক্ষা করছি৷ আইনগতভাবে তারা কারাগারে আইনজীবীকে আটকাতে পারেন না অথচ তারা সেটা করে যাচ্ছেন৷''
রিমশার আটকের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো৷ উল্লেখ্য, পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইন নিয়ে অনেকদিন ধরেই বিতর্ক চলছে৷ এই ব্লাসফেমি আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় প্রাণ দিতে হয় পাঞ্জাব প্রদেশের গভর্নর সালমান তাসিরকে৷ তাঁর হত্যাকারী মুমতাজ কাদিরকে যে কারাগারে রাখা হয়েছে, রিমশা মাসিহকেও সেই একই কারাগারে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে৷
আরআই / ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)