আফগানিস্তানে ন্যাটো
২৮ নভেম্বর ২০১২২০১৪ সালে ন্যাটোর নেতৃত্বে আইসাফ বাহিনী আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাবে, এই সিদ্ধান্ত স্থির হয়ে গেছে৷ জার্মানি এবার সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার নির্দিষ্ট সময়সূচি স্থির করতে শুরু করেছে৷ এক ধাক্কায় নয় – ধাপে ধাপে সৈন্য কমাতে চায় চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কল'এর সরকার৷
২০১৪ সালে অভিযান শেষ হওয়ার পর স্থানীয় বাহিনীর প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে কিছু জার্মান সৈন্য অবশ্য সে দেশে সক্রিয় থাকবে৷ এই মুহূর্তে আফগানিস্তানে প্রায় ৪,৬০০ সৈন্য মোতায়েন রয়েছে৷ বুধবার জার্মান মন্ত্রিসভা স্থির করেছে, ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ১,৩০০ জার্মান সৈন্য দেশে ফিরে আসবে৷ তারপর অবশিষ্ট থাকবে প্রায় ৩,৩০০ সৈন্য৷ মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের পর জার্মান সংসদের নিম্ন কক্ষ বুন্ডেসটাগ'কেও নতুন ম্যান্ডেট অনুমোদন করতে হবে৷ জার্মান উন্নয়ন সাহায্য মন্ত্রী ডির্ক নিবেল বলেছেন, সেনা প্রত্যাহার সত্ত্বেও আফগানিস্তানে কর্মরত জার্মান উন্নয়ন সাহায্য কর্মীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো আপোশ করা হবে না৷
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে বলেছেন, আফগানিস্তান অভিযানের সমাপ্তির সময় ক্রমশ এগিয়ে আসছে৷ আফগানিস্তানের উত্তরে যে সব এলাকায় জার্মান সৈন্যরা মোতায়েন রয়েছে, সেখানে নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতির প্রচেষ্টা চলতে থাকবে, বলেন তিনি৷ সেইসঙ্গে মানবাধিকার রক্ষা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়াও জরুরি বলে মনে করেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ ভেস্টারভেলে বলেন, স্থায়ী শান্তির জন্য চাই এক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, যার আওতায় আফগান সমাজের বিভিন্ন শক্তির মধ্যে বোঝাপড়ার প্রয়োজন হবে৷ উল্লেখ্য, সম্প্রতি কাবুল ব্যাংকে কেলেঙ্কারির প্রেক্ষাপটে আফগানিস্তানের ক্ষমতাকেন্দ্রে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ নিয়ে দুশ্চিন্তা আরও বেড়ে গেছে৷
শুধু সৈন্য প্রত্যাহার নয়, আফগানিস্তানের বর্তমান ও ভবিষ্যতের একটা রূপরেখাও তৈরি করেছে জার্মানি৷ জার্মান মন্ত্রিসভা এই মর্মে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে৷ জার্মান পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, উন্নয়ন সাহায্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই যৌথ রিপোর্ট অনুযায়ী তালেবানের সঙ্গে অ্যামেরিকার সংলাপের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও আলোচনার পথ এখনো পুরোপুরি বন্ধ হয় নি৷ তালেবানের একটা অংশ এই প্রক্রিয়াকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স, এএফপি)