মরতে হবে ধার না শুধেই!
৯ মে ২০১৪প্রায় চল্লিশ লাখ নাগরিকের আয় ও ঋণের কিস্তি ফেরত দেয়ার হার তুলনা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৫ শতাংশ নাগরিকের দেনার পরিমাণ প্রতি বছরই বাড়ছে৷ ১৫ শতাংশের ক্ষেত্রে পরিস্থিতির অবনতি না ঘটলেও উন্নতিরও কোনো লক্ষণ নেই৷ বাকি ৬০ শতাংশ অত্যন্ত ধীর গতিতে তাদের ঋণ শোধের চেষ্টা করে যাচ্ছেন৷
ঋণগ্রহিতার এই সংখ্যা সুইডেনের মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৫২ শতাংশ৷
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থনীতিবিদ ইয়াকব উইন্ডস্ট্রান্ড বলেন, ‘‘এখন যে হারে তাঁরা ঋণ শোধ করে যাচ্ছেন তা অব্যাহত থাকলে তাদের ঋণমুক্ত হতে গড়ে ১০০ বছর করে বাঁচতে হবে৷''
সুইডিশদের গড় আয়ু প্রায় ৮২ বছর৷ বাড়ি বা সম্পত্তি বন্ধক রেখে তারা যে পরিমাণ ঋণ ইতিমধ্যে করেছেন, তা তাদের বার্ষিক আয়ের তুলনায় ৩.৭ গুন বেশি৷ দেখা গেছে, নিম্ন আয়ের মানুষের ক্ষেত্রে ঋণের পরিমাণও বেশি৷
সুইডেনে বেকারত্বের হার ইউরোপের অন্য অনেক দেশের তুলনায় কম৷ তার ওপর অধিকাংশ নাগরিকেরই নিজের বাড়ি থাকায় তাঁদের ধার করার প্রবণতাও কম৷ কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দার পর ব্যাংকগুলো ঋণের সুদের হার রেকর্ড পরিমাণ কমিয়ে আনায় অনেকেই এ সুযোগ কাজে লাগাতে চেয়েছেন এবং বাড়ি বন্ধক রেখে মোটা অংকের ঋণ নিয়েছেন৷ ফলে সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে বাড়ি ও জমির দাম হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে৷
এ পরিস্থিতিতে আবাসন ব্যবসায় ১৯৯০ এর দশকের ধসের কথা মনে করিয়ে দিয়ে সুইডনকে আর্থিক খাতে সংস্কার আনার তাগিদ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল – আইএমএফ৷
অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক পল ক্রুগম্যান গত জানুয়ারিতেও সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেছে, সুইডেন হয়তো আরেকটি মন্দার ঝুঁকি টেনে আনছে৷
অবশ্য অর্থনীতিবিদদের মধ্যে কেউ কেউ বলছেন, সুইডিশদের মধ্যে যারা বাড়ির মালিক, ব্যাংকে তাদের সঞ্চয় ও অন্যান্য সম্পদের পরিমাণ একেবারে খারাপ নয়৷ ফলে ঋণের টাকা ফেরত পেতে খুব বেশি সমস্যা হওয়ার কথা নয়৷
তাঁদের মতে, নতুন বাড়িঘর তৈরি না হওয়ার কারণেই সুইডেনে আবাসনের দাম ক্রমাগত হারে বাড়ছে৷
জেকে / এসবি (এএফপি)