নতুন অধ্যায়ের যাত্রা শুরু
২ জানুয়ারি ২০০৯এবারই প্রথম নারী ভোটারের সংখ্যা ছিলো পুরুষের চেয়ে বেশি৷ অন্যান্যবারের তুলনায় এবার নারী প্রার্থীদের অংশগ্রহণও ছিলো উল্লেখযোগ্য৷
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উৎসাহের সঙ্গে ভোট দিয়েছেন সর্বস্তরের ভোটাররা৷ উত্সবমুখর পরিবেশে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে পুরুষের পাশাপাশি ভোট দিয়েছেন তরুণী থেকে শুরু করে বৃদ্ধা পর্যন্ত৷ অতীতের যেকোন রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যেমন নারীদের সফল অংশগ্রহণ ছিলো তেমনি এবারের নির্বাচনেও৷ তবে এবার সার্বিকভাবে নারীর অংশগ্রহণ ছিলো চোখে পড়ার মতো৷ মোট ৮ কোটি ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৬৯৪ জন ভোটারের মধ্যে নারীর সংখ্যা ৪ কোটি ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৬৫৮৷ পুরুষ ভোটার ৩ কোটি ৯৮ লাখ ২২ হাজার ৫৪৯ জন৷ অন্যান্যবারের চেয়ে এবার নারী প্রার্থীর সংখ্যাও ছিলো বেশি৷ নারীর অধিকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিজ নিজ দলের মেনিফেস্টো নিয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন ৫০ জনেরও বেশি নারী৷ ভোটের লড়াইয়ে ২২টি আসনে বিজয়ী হয়েছেন প্রধান দুই দলের নেত্রী শেখ হাসিনা এবং বেগম খালেদা জিয়াসহ ১৮ জন৷ তাদের মধ্যে অনেক নবীন নারী প্রার্থীই বড় বড় নেতাদের সঙ্গে লড়ে জিতেছেন৷ নির্বাচনে নারীর এই স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের গণতান্ত্রিক চেতনতারই প্রতিফলন ঘটেছে বলে মনে করছেন সবাই৷ তাঁদের মতে, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দেশের জনগণ বুঝতে পেরেছে একমাত্র গণতন্ত্রের পথেই দেশের বিদ্যমান সমস্যা থেকে উত্তোরণ সম্ভব৷
নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে – আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন মহাজোট৷ দিন বদলের প্রতিশ্রুতি শেখ হাসিনার৷ নির্বাচনের পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে বিরোধী দলসহ সকলের সহযোগিতা চাইলেন তিনি৷
আসন্ন নতুন সরকারের কাছে নারীদের প্রত্যাশাও অনেক৷ ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও দুর্নীতিমুক্ত একটি দেশ চায় তারা৷ সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন তাদের চোখে৷
তবে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মতো রাষ্ট্র পরিচালনার মূল কেন্দ্র জাতীয় সংসদে নারীদের উপস্থিতি কি সন্তোষজনক নয় বলে মনে করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রধান আয়শা খানম৷ ক্ষমতার মূল কেন্দ্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং আন্তরিকতা প্রয়োজন- এমনটাই মনে করেন তিনি৷
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামালের প্রত্যাশা, নারীর পূর্ণ অধিকার বাস্তবায়নে ৯৭ সালের নারী নীতি পুনর্বহাল করবে নতুন সরকার৷