নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল তৈরি করছে জার্মানি
১৮ মার্চ ২০২২গতবছর সেপ্টেম্বরে জার্মানিতে নির্বাচনের পর জোট সরকার গঠনে তিন দলের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল সেখানে নতুন নিরাপত্তা কৌশল তৈরির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল৷
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেয়ারবক শুক্রবার বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নৃশংসতার কারণে জার্মানির একটা ‘বিশেষ দায়িত্ব' আছে৷ ‘‘যাদের জীবন, স্বাধীনতা ও অধিকার বিপন্ন হচ্ছে তাদের পাশে দাঁড়াতে আমরা নৈতিকভাবে বাধ্য,'' বলেন তিনি৷
বেয়ারবক জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রথমবারের মতো একটি বিস্তৃত নিরাপত্তা নীতি প্রণয়নে কাজ করছে৷ জার্মানির উদ্যোগে এটা শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি৷
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই যুদ্ধ (ইউক্রেন যুদ্ধ) আমাদের আরেকবার দেখালো যে, ইউরোপের নিরাপত্তা ন্যাটোর সামষ্টিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল৷'' জার্মানির নিরাপত্তা কৌশল ইইউ ও ন্যাটোর নিরাপত্তা নীতির সঙ্গে পরিপূরক হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি৷
বেয়ারবক বলেন, ‘ট্রিপওয়্যার' কৌশল - যার মানে হচ্ছে হুমকি মনে করলে ন্যাটো পূর্ব ইউরোপে সৈন্য পাঠিয়ে থাকে - আর যথেষ্ট নয়৷ দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপে ন্যাটোর উপস্থিতি বাড়ানো প্রয়োজন মন্তব্য করে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ‘‘এক্ষেত্রে জার্মানি স্লোভাকিয়ায় অনেক অবদান রাখবে৷''
পরমাণু অস্ত্রবিহীন বিশ্ব গড়তে জার্মানির লক্ষ্যের কথা আবারও সবাইকে মনে করিয়ে দেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷
সাইবার হামলা আধুনিককালের যুদ্ধের একটি অপরিহার্য অংশ উল্লেখ করে জার্মানির নতুন নিরাপত্তা নীতিতে এ ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দেন বেয়ারবক৷
জাতীয় নিরাপত্তা নীতির পাশাপাশি জার্মানি চীন বিষয়ে নতুন একটি নীতি তৈরি করবে বলেও শুক্রবার ঘোষণা দেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর রাশিয়ার উপর ইউরোপের জ্বালানি নির্ভরতা নিয়ে এখন যে বিতর্ক চলছে সেটা আট বছর আগে রাশিয়া যখন ক্রাইমিয়া দখল করেছিল তখন করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেন বেয়ারবক৷ সবুজ দলের এই মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাদের দ্রুত জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে ঝুঁকতে হবে৷'' বেয়ারবক বলেন, ‘‘এটা শুধু ক্লিন এনার্জিতে বিনিয়োগ নয়, এটা আমাদের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বেও বিনিয়োগ৷''
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর জার্মান সরকার সামরিক বাহিনীর আধুনিকীকরণে এককালীন ১০০ বিলিয়ন ইউরো বা সাড়ে নয় লাখ কোটি টাকা বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছে৷ এছাড়া জার্মানি তার জিডিপির দুই শতাংশ ন্যাটোতে দেয়ার অঙ্গীকার করেছে৷ যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-৩৫ ফাইটার জেট কেনার কথাও জানিয়েছে জার্মানি৷
অ্যালেক্স বেরি/জেডএইচ