1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নতুন সৌর প্রযুক্তি জার্মানিতে আশার আলো দেখাচ্ছে

১৫ জানুয়ারি ২০২৪

সৌরবিদ্যুতের গুরুত্ব বেড়েই চলেছে৷ তবে প্রচলিত সোলার সেল সূর্যের আলোর পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করতে পারে না৷ নতুন এক প্রযুক্তির দৌলতে জার্মানি সোলার সেল উৎপাদনের ক্ষেত্রে আবার হারানো সুযোগ ফিরে পেতে চায়৷

https://p.dw.com/p/4bG5t
ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যে একটি পরীক্ষামূলক সোলার প্লান্ট প্রায় এক কোটি দশ লাখ ইউরো অংকের সরকারি অনুদান পেয়েছে।
ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যে একটি পরীক্ষামূলক প্লান্ট প্রায় এক কোটি দশ লাখ ইউরো অংকের সরকারি অনুদান পেয়েছে।ছবি: Terelyu/Pond5 Images/IMAGO

জার্মানির মদতেই সূর্যের আলো থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রযুক্তি জনপ্রিয় হয়েছে৷ তারপর উৎপাদনের কাজ চীনে সরে গেল৷ এবার প্রযুক্তির অগ্রগতি এই ক্ষেত্রকে আবার জার্মানিতে ফিরিয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ অক্সফোর্ড পিভি কোম্পানির প্রযুক্তির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান ক্রিস কেসের সূত্র অনুযায়ী এটাই এখন সারা বিশ্বে সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে কার্যকর সোলার সেল

এবার বড় আকারে সোলার সেলের নতুন এই প্রজন্মের উৎপাদন শুরু হবে৷ এটাকে প্রযুক্তিগত বিপ্লব হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে৷ এর ফলে প্রচলিত প্রযুক্তির তুলনায় ২০ শতাংশেরও বেশি বাড়তি জ্বালানি উৎপাদন করা সম্ভব৷ ক্রিস কেস বলেন, ‘‘আমরা সোলার সেলের জন্য নতুন এক উপাদান সৃষ্টি করতে চেয়েছিলাম৷ উৎপাদনের ব্যয় আরো কমানো এবং সোলার স্পেকট্রামের রঙগুলির সঙ্গে আরো মানানসই করে তোলাই ছিল উদ্দেশ্য৷ আরো চিকন স্তর বসিয়ে প্রচলিত সিলিকন প্রযুক্তির সঙ্গেই আমরা নতুন এই উপাদানের মেলবন্ধন ঘটাচ্ছি৷ আসলে একটির উপরে আরেকটি সোলার সেল বসানো হচ্ছে৷''

এখনো পর্যন্ত এই প্রযুক্তি এক পরীক্ষামূলক প্লান্টে প্রয়োগ করা হচ্ছে৷ কিন্তু সেই কারখানায় সম্প্রসারণ ঘটিয়ে বছরে এক কোটি সোলার সেল তৈরি করা সম্ভব৷ এমন সেলের বিপুল চাহিদা রয়েছে৷ অক্সফোর্ড পিভি কোম্পানির আর্থিক বিভাগের প্রধান ফ্রাংক নোভরোটের মতে, ‘‘সবাই গ্রিন হাইড্রোজেনের কথা বলছে৷ কিন্তু সেই হাইড্রোজেন আগে উৎপাদন করতে হবে, যার জন্য অনেক জ্বালানির প্রয়োজন৷ এই কাজে সৌরবিদ্যুৎ ক্ষেত্র সঠিক সহযোগী৷''

জার্মানি ও সোলার এনার্জি শিল্পক্ষেত্রের মধ্যে সম্পর্ক বেশ জটিল৷ ২০ বছর আগে বিপুল রাষ্ট্রীয় সহায়তা নিয়ে সেই যাত্রা শুরু হয়েছিল৷

জার্মানি অবশ্য বেশ দ্রুত নিজস্ব উৎপাদন ক্ষমতার একটা বড় অংশ হারিয়েছিল৷ কারণ সেই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠিত হবার পর দেখা গেল, অন্যরা অনেক সস্তায় উৎপাদন করতে পারে৷ জার্মান অর্থনীতি গবেষণা কেন্দ্রের ক্লাউডিয়া কেমফ্যার্ট মনে করেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু ভুল করা হয়েছিল৷ প্রথমত শুরুর দিকে যে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছিল, ২০০০ সাল ও তার পরে সেগুলি অনেক কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ সেইসঙ্গে গোটা বাজারও ভেঙে পড়তে দেওয়া হয়েছিল৷ আরেকটি ভুল ছিল, চোখের সামনে অনেক কোম্পানিকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে দেওয়া হয়েছিল৷ বিশেষ করে চীনই ছিল প্রধান গন্তব্য৷''

মহাকাশেও হবে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র

বর্তমানে সবচেয়ে বড় সোলার উপাদান উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলি এশিয়া মহাদেশে রয়েছে৷ অথচ ইউরোপ জ্বালানির চাহিদা মেটাতে নির্ভরতা আরো কমাতে চায়৷ তাহলে এখন কী হবে? ক্লাউডিয়া কেমফ্যার্টের মতে, ‘‘চীনে যে মাত্রায় উৎপাদন ক্ষমতা গড়ে তোলা হয়েছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিতে অনেক দেরি হয়ে গেছে৷ তবে অবশ্যই কিছু ক্ষেত্রে নতুন ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারি৷ যেমন অত্যন্ত উদ্ভাবনশীল ও একইসঙ্গে অতি কার্যকর প্লান্ট গড়ে তুলতে পারি৷''

বার্লিনে জ্বালানি ক্ষেত্রের কিছু কোম্পানি ও স্থানীয় রাজনীতিবিদদের এক সম্মেলন চলছে৷ অক্সফোর্ড পিভি কোম্পানির আর্থিক বিভাগের প্রধানও সেখানে উপস্থিত৷ কারণ ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যে তাদের পরীক্ষামূলক প্লান্ট প্রায় এক কোটি দশ লাখ ইউরো অংকের সরকারি অনুদান পেয়েছে৷

তবে গোটা বিনিয়োগের অংক ইতোমধ্যে দশ কোটি ইউরো ছুঁয়েছে৷ কোম্পানির আরো বড় পরিকল্পনা রয়েছে৷ ফ্রাংক নোভরোট বলেন, ‘‘আমরা প্রায় পাঁচ গিগাওয়াট ক্ষমতার সোলার সেল উৎপাদনের পরিকল্পনা করছি৷ সঙ্গে উপযুক্ত মডিউলও উৎপাদন করা হবে৷ বর্তমানে আমরা বিভিন্ন সাইটের মূল্যায়ন করছি৷''

এর অর্থ, সরকারি অনুদানের অংকের মধ্যেও তুলনা করা হচ্ছে৷ অনেক রাষ্ট্র উচ্চ মানের প্রযুক্তি প্রস্তুতকারীদের আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে৷ তারা বিশাল অংকের ভরতুকি দিতে প্রস্তুত৷ প্রশ্ন হলো, ইউরোপ না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র – অক্সফোর্ডের নতুন গিগাফ্যাকটরি কোথায় তৈরি করা হবে?

অক্সফোর্ড পিভি কোম্পানির ফ্রাংক নোভরোট বলেন, ‘‘অ্যামেরিকা থেকে স্পষ্ট অংক জানা গেছে৷ ইনফ্লেশন রিডাকশন অ্যাক্টের আওতায় এমনকি আমাদের জন্যও অকল্পনীয় একশো কোটি ডলারের বেশি অংক মঞ্জুর করার কথা চলছে৷''

এমন প্রতিযোগিতার মুখে ইইউ-র কি টিকে থাকার ক্ষমতা বা প্রয়োজনীয়তা আছে?

বর্তমানে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে সে বিষয়েই দরকষাকষি চলছে৷ এই উদ্যোগের বিশাল গুরুত্ব রয়েছে৷ সৌরবিদ্যুৎ বর্তমানে সবচেয়ে সস্তার জ্বালানি৷ সেইসঙ্গে পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি৷

সৌরবিদ্যুতে আশার আলো দেখাচ্ছে জার্মান প্রতিষ্ঠান

মারিয়ন হ্যুটার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান