নোট বাতিলে ব্যাহত অর্থনীতি
১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭সংসদে পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশের আগেই সংসদে সরকারি অর্থনৈতিক সমীক্ষা রিপোর্ট পেশ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি৷ দেশের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যমের তদারকিতে করা এই সমীক্ষায় স্বীকার করে নেওয়া হলো, আচমকা পুরনো নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে ব্যাহত হয়েছে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার৷ ২০১৬-১৭ আর্থিক বর্ষে বৃদ্ধির যে পূর্বাভাস ছিল, তার থেকে অন্তত ০ দশমিক ৫ কম বৃদ্ধি হবে৷ যদিও সমীক্ষায় আশ্বাস দেওয়া হয় যে, সাময়িক ক্ষতি হলেও দীর্ঘমেয়াদি লাভ হবে৷ ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরেই নাকি আবার ঘুরে দাঁড়াবে জাতীয় অর্থনীতি৷ গড় জাতীয় উৎপাদনের বৃদ্ধির হার বেড়ে ৬ দশমিক ৭৫ থেকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে থাকবে৷ ফলে আবারও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দ্রুত বৃদ্ধিশীল অর্থনীতির তালিকায় চলে আসবে ভারত৷
এই অর্থনৈতিক সমীক্ষার প্রস্তাব – ব্যক্তিগত আয়কর এবং কোম্পানি আয়করের হার কমানো উচিত৷ এই জল্পনা অবশ্য চাকুরিজীবী এবং বণিক মহলে অনেকদিন থেকেই শোনা যাচ্ছে যে এই দুই ক্ষেত্রে আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো হবে৷ এর পাশাপাশি এও শোনা যাচ্ছে যে তার দরুণ যে রাজস্ব ঘাটতি হবে, তা ভরাতে বাড়িয়ে দেওয়া হবে পরিষেবা করের হার৷ অর্থনৈতিক সমীক্ষায় এছাড়াও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সমস্ত উচ্চ আয়কে ক্রমশ আয়করের আওতায় নিয়ে আসার৷ এক্ষেত্রে সম্ভবত কৃষি আয়ের ওপর কর বসানোর দিকে এগোচ্ছে সরকার? আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব আছে সমীক্ষায়৷ দেশের দরিদ্র মানুষের ন্যূনতম আয় নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে, যাতে দারিদ্র দূরিকরণ খাতে যেসব সরকারি ভরতুকি চালু আছে, তার দায় থেকে ক্রমশ নিষ্কৃতি পেতে পারে সরকার৷ বলা হয়েছে, এখনই যদি ন্যূনতম উপার্জন নিশ্চিত নাও করা যায়, এ নিয়ে অন্তত আলোচনা শুরু করা যেতে পারে৷ এবং এই আলোচনার প্রয়োজন যে আছে, সেটা খুব পরিষ্কার৷ কারণ সমীক্ষা প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এই পরিকল্পনাকে সফল করতে হলে দরকার জনধন প্রকল্প এবং মোবাইল ফোন-আধার কার্ড সংযুক্তি৷ এর জন্য যে খরচ, তা জোগানোর জন্য কেন্দ্র সরকার এবং রাজ্য সরকারগুলির বোঝাপড়ার প্রয়োজন রয়েছে৷
পুরনো নোট বাতিলের পর বাজারে নতুন নোটের জোগানের বিষয়টি নিয়েও কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সমীক্ষায়৷ যেমন চাহিদা ভিত্তিক নোট সরবরাহ৷ আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে – ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা'-য় যে অর্থ সংগৃহিত হবে, তা সরকারি প্রকল্পের খাতে খরচ না করে, রাষ্ট্রায়ত্ব ক্ষেত্রে সম্পদ পুনর্নির্মাণ এজেন্সি গড়ার কাজে লাগাতে৷ অথবা পণ্য পরিষেবা কর বা ‘জিএসটি'-র কারণে রাজ্যগুলির যে রাজস্ব ক্ষতি, তা পূরণ করার কাজে খরচ করতে বলা হয়েছে ঐ পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা৷
বন্ধু, অর্থনৈতিক দিক থেকে কোন দিকে যাচ্ছে ভারত? লিখুন আপনার মন্তব্য, নীচের ঘরে৷