‘দুর্নীতি হয়নি, ষড়যন্ত্র হয়েছে’
১২ জুন ২০১৩মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের নতুন আবাসিক প্রতিনিধি জোহান জুট৷ তাঁর সঙ্গে বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী জানান, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদন তাঁর কাছে জমা দিয়েছেন জোহান জুট৷
অর্থমন্ত্রী বলেন, তিনি প্রতিবেদনটি পড়ে দেখেননি৷ প্রতিবেদনে কিছু তথ্য এবং সুপারিশ রয়েছে৷ তবে পদ্মা সেতু নিয়ে কোন দুর্নীতি হয়নি, ভবিষ্যতেও হবেনা৷ দুর্নীতির ষড়যন্ত্র হয়েছিল৷ দুর্নীতির ষড়যন্ত্র দুর্নীতি কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিষয়টি এখন দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে৷ তারাই ভালো বলতে পারবে৷ যদি ষড়যন্ত্রে শাস্তির বিধান থাকে, জড়িতদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে৷''
অর্থমন্ত্রী আরও জানান, বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি তদন্ত প্রতিবেদনটি বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশের অনুমতি চেয়েছে এবং অনুমতি দেয়া হয়েছে৷ অর্থমন্ত্রী বলেন, তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হলে তদন্ত প্রতিবেদনে কী আছে সবাই জানতে পারবেন৷
এদিকে আবাসিক প্রতিনিধি জোহান জুট সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, তিনি মনে করেন, নিজস্ব অর্থায়নে বাংলাদেশের পক্ষে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব৷ এই প্রকল্পটি বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ কিন্তু বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পে যুক্ত হবেনা৷ তবে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের ঋণপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে৷ বিশ্বব্যাংক চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশকে ১৬০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেবে বলে জানান তিনি৷
এদিকে টিআইবি'র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, সরকারেরই উচিত বিশ্বব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ করা৷ তা করলে দেশের মানুষ জানতে পারবে, পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগ কতটুকু যৌক্তিক৷ এই তদন্ত প্রতিবেদনে দুর্নীতির অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট, তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে৷ অভিযোগ প্রমাণ না হলে তা সরকারেরই পক্ষেই যাবে৷ তাই স্বচ্ছতার জন্যই এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন ড. ইফতেখার৷ তিনি বলেন, এই প্রতিবেদন দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তেও সহায়ক হবে৷
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংকসহ পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে তাদের প্রতিশ্রুত ঋণ প্রত্যাহার করে৷ এরপর অন্য দাতারাও অর্থায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেয়৷ ৬.১৫ কি.মি দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতু প্রকল্পে খরচ ধরা হয়েছিল ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক ১.৫ বিলিয়ন, এডিবি ৬১৫ মিলিয়ন, জাইকা ৪১৫ মিলিয়ন এবং আইডবি ১৪০ মিলিয়ন ডলার ঋণ নাম মাত্র সুদে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল৷