পরবর্তী মহামারির প্রস্তুতির ডাক ম্যার্কেল, মাক্রোঁর
১০ জুন ২০২০ইউরোপ করোনা সংকট আপাতত কিছুটা সামলে নিলেও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই মহামারি এখনো মারাত্মক ক্ষতি করে চলেছে৷ পরিস্থিতি সামলাতে এখনো কোনো ওষুধ বা টিকা আবিষ্কার করা সম্ভব হয় নি৷ এরই মধ্যে পরবর্তী মহামারির প্রস্তুতির আহ্বান জানালেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরও চারটি দেশের নেতা৷ করোনা সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রে নিজস্ব প্রস্তুতি যথেষ্ট জোরদার ছিল না, এ কথা কার্যত মেনে নিয়ে তাঁরা ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি সামলাতে আরও পদক্ষেপ নিতে চান৷
জার্মানি ও ফ্রান্স ছাড়াও স্পেন, পোল্যান্ড, বেলজিয়াম ও ডেনমার্কের নেতারা ইইউ পর্যায়ে জোরালো প্রস্তুতির ডাক দিয়েছেন৷ ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েনকে লেখা একটি যৌথ চিঠিতে মহামারি মোকাবিলার প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরও সক্রিয় ভূমিকার দাবি করেছেন৷
উল্লেখ্য, করোনা মহামারির প্রথম পর্যায়ে ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলি মরিয়া হয়ে বিচ্ছিন্নভাবে জাতীয় পর্যায়ে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছিল৷ সীমান্ত বন্ধ করে, চিকিৎসা সরঞ্জাম মজুদ করে এবং বিপুল পরিমাণ সরকারি ব্যয়ের ঘোষণা করে একাধিক ইইউ বিধিনিয়ম লঙ্ঘন করেছিল৷ সে সময়ে ব্রাসেলসের ছত্রছায়ায় কোনোরকম পারস্পরিক সমন্বয় ছাড়াই সব দেশ ‘একলা চলো রে’ নীতি অনুসরণ করেছিল৷ ভবিষ্যতে আবার এমন সংকট দেখা দিলে সেই ‘ত্রুটি’ এড়াতে চান ইউরোপের শক্তিশালী দেশগুলির নেতারা৷ তাই বর্তমান দুর্বলতা ভালোভাবে বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতের জন্য জোরালো প্রস্তুতির প্রয়োজন বলে তাঁরা মনে করেন৷ বিশেষ করে সংকটের সময়ে ইউরোপে জরুরি ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব নিয়ে তাঁরা মোটেই সন্তুষ্ট নন৷
করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পরেও ইইউ দেশগুলির মধ্যে সংক্রমণ সংক্রান্ত তথ্য আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা গেছে৷ ইইউ-র ছত্রছায়ায় এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের মধ্যে অসঙ্গতি দূর করার উপর জোর দিয়েছেন ছয়টি সদস্য দেশের নেতা৷ এ প্রসঙ্গে ইউরোপীয় রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের হাতে আরও ক্ষমতা তুলে দেবার প্রস্তাব দিয়েছেন ম্যার্কেল, মাক্রোঁ ও অন্যান্য নেতারা৷ ওষুধপত্র আমদানির ক্ষেত্রে চীন ও ভারতের মতো দেশের উপর নির্ভরতা কমিয়ে অন্যান্য বাজার থেকেও সে সব কেনার ডাক দিয়েছেন তাঁরা৷ আগামী ১৯শে জুন এক ভারচুয়াল শীর্ষ সম্মেলনে ইইউ নেতারা করোনা সংকটের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করবেন৷
এদিকে করোনা সংক্রমণের ‘দ্বিতীয় তরঙ্গ’ নিয়ে জল্পনাকল্পনার মাঝেই ইউরোপের অনেক দেশে বিধিনিয়ম ধীরে ধীরে শিথিল করা হচ্ছে৷ পর্যটনের জন্যও কিছু দেশের দরজা সীমিতভাবে খোলা হচ্ছে৷
এসবি/কেএম (এএফপি, রয়টার্স)