৬০ জন মার্কিন কূটনীতিক বহিষ্কৃত
৩০ মার্চ ২০১৮গত শতাব্দীতে শীতল যুদ্ধের অবসানের পর রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা জগতের এমন কূটনৈতিক সংঘাত দেখা যায়নি৷ ব্রিটেনের প্রতি সংহতি দেখিয়ে অ্যামেরিকাসহ ইউরোপের একাধিক দেশ বেশ কিছু রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কারের পর রাশিয়াও পালটা আঘাত হানলো৷ বৃহস্পতিবার সেদেশ সেন্ট পিটার্সবার্গে মার্কিন কনসুলেট বন্ধ করার এবং ৬০ জন মার্কিন কূটনীতিককে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ আগামী ৫ই এপ্রিলের মধ্যে তাঁদের দেশ ছাড়তে হবে৷ অন্য যেসব দেশ রুশ কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে, সেসব দেশের কূটনীতিকদেরও বহিষ্কারের ঘোষণা করেছে মস্কো৷ ফলে সব মিলিয়ে পশ্চিমা দেশগুলির ১৫০ জনেরও বেশি কূটনীতিককে মস্কো ছাড়তে হচ্ছে৷ উল্লেখ্য, এর আগে রাশিয়া ২৩ জন ব্রিটিশ কূটনীতিককে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল৷ রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এক সংবাদ সম্মেলনে এই পালটা পদক্ষেপের ঘোষণা করেন৷
ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, মস্কোর এই সিদ্ধান্তের ফলে রুশ-মার্কিন সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটছে৷ তবে এমন সিদ্ধান্ত অপ্রত্যাশিত ছিল না৷ ফলে মার্কিন প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে বলেও সেই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে৷ মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর আগে রাশিয়ার সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করে আরও পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছিল৷ ফলে উত্তেজনা আরও বাড়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে৷
গোটা ঘটনার সূত্রপাত গত ৪ই মার্চ ইংল্যান্ডের স্যালিসবারি শহরে৷ প্রাক্তন ‘ডাবল এজেন্ট' সের্গেই স্ক্রিপাল ও তাঁর কন্যা ইয়ুলিয়া ‘নভিচক' নামের মারাত্মক নার্ভ টক্সিনের কারণে বিষক্রিয়ার শিকার হন৷ সোভিয়েত আমলে এই টক্সিন ব্যবহার করা হতো৷ এই হামলার জন্য ব্রিটেন সরাসরি রাশিয়াকে দায়ী করেছে৷ শুধু বিদেশের মাটিতে হামলা নয়, রাশিয়া রাসায়নিক অস্ত্র সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাও লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷
বলা বাহুল্য, রাশিয়া এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে৷ তাছাড়া এই অভিযোগের সপক্ষে কোনো প্রমাণ পেশ করা হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মস্কো৷ রাশিয়ার মতে, লন্ডন ও ওয়াশিংটন ‘রাশিয়া-ভীতি' সৃষ্টি করে বাকি দেশগুলির উপর চাপ সৃষ্টি করে নতুন শীতল যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে৷
গোটা ঘটনাকে ঘিরে রাশিয়ার আচরণের মধ্যে কিছুটা সংযমের লক্ষণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ কূটনৈতিক যুদ্ধে মস্কো এখনো পর্যন্ত হুবহু একই পালটা পদক্ষেপ নিয়েছে৷ অ্যামেরিকাও ঠিক ৬০ জন রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছিল৷ দুর্বল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে আন্তর্জাতিক স্তরে একঘরে হয়ে পড়া রাশিয়ার পক্ষে মোটেই সুখকর নয়৷ তার উপর মস্কো পশ্চিমা দেশগুলির মধ্যে এমন ঐক্যেরও প্রত্যাশা করেনি৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এপি)