1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাকিস্তানে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ব্লাসফেমি মামলা

১০ সেপ্টেম্বর ২০২০

গত এক মাসে অন্তত ৪০ জনের বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি আইনের অধীনে অভিযোগ দায়ের করেছে পাকিস্তানের পুলিশ৷ একে আশঙ্কাজনক উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশটির মানবাধিকার কর্মীরা৷

https://p.dw.com/p/3iHFW
Pakistan Proteste nach Lynchmord Student Mashal Khan
ফাইল ছবিছবি: picture-alliance/AP/F. Khan

পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইনকে কেন্দ্র করে মামলা, হত্যা, সাজার ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে৷ দেশটির বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা থেকে শুরু করে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরও এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে৷ 

হিউম্যান রাইটস কমিশন অব পাকিস্তান (এইচআরসিপি) জানিয়েছে গত এক মাসে ৪০টিরও বেশি এমন মামলা নিবন্ধন করেছে পুলিশ৷ বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, এই মামলাগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হয়েছে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিশেষ করে শিয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে৷ বার্তা সংস্থা ডিপিএ-কে এইচআরসিপির চেয়ারম্যান মেহদী হাসান বলেন, ‘‘এটা (মামলা) অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, যা সাম্প্রদায়িক সহিংসতা উস্কে দিতে পারে বলে আমাদের আশঙ্কা৷''

সবশেষ গত বুধবার ব্লাসফেমি বা ধর্মনিন্দার অভিযোগে এক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে পাকিস্তানের আদালত৷ ৩৭ বছরের ঐ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ইসলাম নিয়ে ‘অন্যায়’ এবং ‘অবমাননাকর’ মন্তব্য করেছেন তিনি৷ যদিও তার আইনজীবীর দাবি, ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে না চাওয়ায় তার বিরুদ্ধে ধর্মনিন্দার অভিযোগ করা হয়৷ প্রায় সাত বছর ধরে বিচার চলার পরে মঙ্গলবার নিম্ন আদালত তাকে ফাঁসির সাজা দেয়৷

ব্লাসফেমি আইন

পাকিস্তানে এই আইনের সূচনা হয় সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউল হকের অধীনে ১৯৮০ এর দশকে৷ এই আইন অনুযায়ী ইসলামের নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) কে অবমাননা করলে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড৷ এছাড়া ইসলাম ধর্ম, পবিত্র কোরআনসহ নির্দিষ্ট ধর্মীয় ব্যক্তিদের নিন্দা বা অবমাননায় কারাদণ্ডসহ কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে৷

শিখদের শ্মশানঘাট পাহারায় পাকিস্তানের মুসলিম পরিবার

যুক্তরাষ্ট্রের কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআরএফ)-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ৮০ জন এই ‘ব্লাসফেমির অপরাধে' কারাগারে আটক রয়েছেন৷ তাদের অর্ধেকই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি৷

তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, সংখ্যালঘুদের দমনে এই আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে৷ অনেক ক্ষেত্রে এমনকি মুসলিমরাও ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে একজন আরেকজনকে ব্লাসফেমি মামলায় ফাঁসিয়ে দিচ্ছেন৷

বিচারের আগেই হত্যা

জুলাই মাসের শেষের দিকে পাকিস্তানের পেশোয়ারে তাহির নামিস নামে একজনকে বিচার চলাকালে আদালতকক্ষের ভিতরেই গুলি করে হত্যা করা হয়৷ তার বিরুদ্ধে ব্লাসফেমির অভিযোগ আনা হয়েছিল৷ ঐ ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ায় বিবৃতি দিয়ে নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ হত্যাকারীকে ‘ধর্ম যোদ্ধা’ অ্যাখ্যা দিয়ে তার মুক্তির দাবিতে তখন মিছিলও করে কয়েক হাজার কট্টর সমর্থক৷

বিচার চলাকালীন এমন হত্যার ঘটনা এই প্রথম নয়৷ ১৯৮০-র দশক থেকে এখন পর্যন্ত ব্লাসফেমির অভিযোগ আনা হয়েছে এমন ৭৫ জন ব্যক্তি বা কোনো গোষ্ঠীর হাতে প্রাণ হারিয়েছেন৷

এইচআরসিপি চেয়ারম্যান মেহদী হাসান বলেন, বিচারাধীন ব্যক্তির ভাগ্য মানুষের করুণার উপর ছেড়ে দিয়ে রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের লঙ্ঘন করছে৷

জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরও এ নিয়ে মুখ খুলেছে৷ সংস্থার মুখপাত্র রুপার্ট কলভিলে সাংবাদিকদের বলেন, ব্লাসফেমির অভিযোগ খুবই উদ্বেগজনক৷ কেননা, অভিযুক্ত ব্যক্তি সহিংসতার ঝুঁকিতে পড়ছেন৷  এ বিষয়ে পাকিস্তানের সরকারের কাছে তারা উদ্বেগ তুলে ধরেছেন বলেও জানান তিনি৷ ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে ব্লাসফেমি আইনের প্রয়োগ বাড়ছে উল্লেখ করে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার উস্কানিমূলক ঘটনা বন্ধে দেশটির নেতৃত্বের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তারা৷

এফএস/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)

২০১৮ সালের ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য