পাকিস্তানের বাজাউরে হামলার দায়িত্ব স্বীকার টিটিপি’র
২৬ ডিসেম্বর ২০১০তালেবান জঙ্গিদের হামলা কিংবা তালেবান বিরোধী সেনা অভিযানের ঘটনা পাকিস্তানে যেন একটা রুটিন হয়ে পড়েছে৷ তবে বড়দিনে ত্রাণ নিতে আসা নিরীহ মানুষদের উপর আত্মঘাতী হামলার ঘটনা নাড়া দিয়েছে মানুষের হৃদয়৷ ত্রাণের আশায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা অভাবী মানুষের উপর চালানো শনিবারের হামলাকে তাই মানবতার বিরুদ্ধে অবমাননা বলে নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ একইসাথে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে নিরপরাধ মানুষের উপর এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের জ্যেষ্ঠ পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যালিস্টেয়ার বার্ট৷ ঐ হামলায় মৃতের সংখ্যা ৪৪ বলে জানিয়েছে জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ৷ আহত হয় অন্তত ৭০ জন৷ আহতদের মধ্যে আট জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক আফিফ খান৷
এদিকে, এমন নৃশংস হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে বার্তা প্রকাশ করেছে তালেবান গোষ্ঠীর অন্যতম শাখা টিটিপি৷ তাদের মুখপাত্র আজম তারিক বলেছে, ‘‘এই উপজাতির লোকেরা সরকারি বাহিনীকে সহযোগিতা করেছে৷ তাই আমরা তাদেরকে তার শাস্তি দিয়েছি৷ স্রষ্টার নামে শপথ করে আমরা বলতে চাই যে, ভবিষ্যতে যারা সরকারকে সহযোগিতা করবে তাদের বিরুদ্ধেও আরো এরূপ হামলা অব্যাহত রাখবো আমরা৷''
অন্যদিকে, একইদিনে মোহমান্দ উপজাতীয় অঞ্চলে অভিযান চালিয়েছে সরকারি নিরাপত্তা কর্মীরা৷ এতে ৪০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে দাবি করছে সরকারি সূত্র৷ মোহমান্দের শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমজাদ আলি খান বলেন, হেলিকপ্টার থেকে গোলা বর্ষণ করা হয় জঙ্গি আস্তানা লক্ষ্য করে৷ ফলে সেখানে থাকা জঙ্গিরা নিহত হয়৷ কিন্তু এসব অভিযানে নিহতরা আদৌ জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্য কিনা সে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে বরাবরই৷ এমনকি এসব অভিযানেও বিপুল সংখ্যক বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন বলেও আশঙ্কা বিশ্লেষকদের৷
২০০৭ সালে ইসলামাবাদে চরমপন্থীদের একটি মসজিদে সরকারি বাহিনীর অভিযান থেকে এপর্যন্ত অসংখ্য হামলা ও অভিযানে প্রায় চার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে৷ ফলে এসব সরকারি অভিযানের যথার্থতা নিয়েও কিছুটা ক্ষোভ বিরাজ করছে স্বয়ং পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের মনে বলে একাধিক সূত্রের খবর৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম