পোশাক কারখানায় আগুন, ১১২টি লাশ উদ্ধার
২৫ নভেম্বর ২০১২এই শোকাবহ ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে পড়েছেন দেশের মানুষ৷ আর স্বজনদের আহাজারিতে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর যেন আরেক কারবালা৷ এই কান্নার কোন জবাব নেই ৷ নেই কোন শন্তনা৷
তাজরীন ফ্যাশান নামের বহুতল পোশাক কারখানাটিতে আগুন লাগে শনিবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে৷ আর তা নেভানো সম্ভব হয় রোববার ভোর ৬ টার দিকে৷ আগুনে পুড়ে খাক হয়েছে কারখানাটির শতাধিক নারী ও পুরুষ শ্রমিক৷ ভাই তার বোনকে খুঁজছেন৷ বোন খুঁজছেন ভাইকে৷ মা সন্তানকে৷ মৃত্যুর মিছিল আর স্বজনহারাদের আহাজারি৷
আগুন নেভানোর পর উদ্ধার অভিযান শুরু হলে বিকেল পর্যন্ত ১১২ জনের লাশ পাওয়া যায় আগুনে পোড়া ধ্বংসস্তূপের মাঝে৷ কিন্তু অনেক লাশই সনাক্ত করা যাচ্ছে না৷ ভয়াবহ আগুনে পুড়ে বিকৃত হয়ে গেছে৷ বিকেল পর্যন্ত ৪৫ টি লাশ সনাক্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে৷ তবে এখনো অনেক পোশাক শ্রমিক নিখোঁজ আছেন৷
এই উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছেন সেনা সদস্যরাও৷ সাভারের জিওসি মেজর জেনারেল সৈয়দ হাসান সারওয়ার্দি জানান, তারা চেষ্টা করছেন প্রতিটি লাশ তাদের পরিবারের কাছে ফেরত দেয়ার৷ যাদের লাশ শেষ পর্যন্ত সনাক্ত করা যাবে না সেই লাশ সরকারি ব্যবস্থাপনায় দাফন করা হবে৷
ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দলের পরিচালক মাহবুবুর রহমান জানান, তাজরীন ফ্যাশানে নেই অগ্নি নির্বাপণের কার্যকর ব্যবস্থা৷ সিঁড়িগুলোও বন্ধ করে দেয়া হয়৷ নীচতলার সুতার গুদামে আগুন লাগার পর তা দ্রুতই ছড়িয়ে পরে সব ফ্লোরে৷
সরকারের মন্ত্রী ও বিজিএমইএ নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন৷ আগুনের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এটি কোন নাশকতা কিনা তা তদন্ত করে দেখা হবে৷ আর দেয়া হবে ক্ষতিপূরণ৷
বাংলাদেশে প্রায় ৫ হাজার তৈরি পোশাক কারখানা আছে৷ রপ্তানি আয়ের ৮০ ভাগই আসে পোশাক শিল্প থেকে৷ ফায়ার সার্ভিস জানায়, তাদের হিসাবে এই ঘটনার আগে ২০০৬ সাল থেকে প্রায় ৬০০ পোশাক শ্রমিক মারা গেছেন কাখানায় আগুন লেগে৷