পোর্ট সইদ’এ দাঙ্গা
২৬ জানুয়ারি ২০১৩বিপ্লবের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ প্রত্যাশা করা গেছিল ঠিকই, কিন্তু সেই সঙ্গে যুক্ত হল পোর্ট সইদ’এর ঘটনা৷ নয়তো মুরসির বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ ছিল, তিনি বিপ্লবের লক্ষ্যগুলির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন৷ মুরসি ও তাঁর মুসলিম ব্রাদারহুড দল ক্ষমতায় এসেছে ঐ বিপ্লবের কল্যাণেই৷ গণতন্ত্র, সংস্কার কি আধুনিকতার প্রশ্নে মিশরের মুসলিম সমাজে যে গভীর বিভাজন বর্তমান ছিল, সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর ফলে সেটাই প্রত্যক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ সঙ্গে আছে অর্থনীতির দুরবস্থা: মিশরীয় মুদ্রার অধোগতি, বিদেশি পুঁজিবিনিয়োগ উধাও, পর্যটকরা মিশরে আসা কমিয়েছে, বেকারত্ব বাড়ছে৷
কাজেই শুক্রবার তাহরির চত্বরে সেই পুরাতন দৃশ্যবলীর পুনরাবৃত্তি ঘটেছে: জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ৷ অসন্তোষের তীব্রতা বোঝা যায় হতাহতের সংখ্যা থেকে: শুক্রবারের সংঘর্ষে সারা দেশে অন্তত সাতজন নিহত ও প্রায় ৫০০ জন আহত হয়েছে৷ সুয়েজে সামরিক বাহিনি নামাতে হয়েছে৷ রাজধানী কায়রোয় শুধু তাহরির স্কোয়ার ও তার আশেপাশেই নয়, ৬ই অক্টোবর সেতু এবং শহরের কেন্দ্রেও বিক্ষোভ ও অবরোধ চলেছে৷ মিশরের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেক্সান্দ্রিয়াতেও বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনির মধ্যে সংঘর্ষ ঘটেছে৷
অপরদিকে পোর্ট সইদ’এ আগুন জ্বলার কারণ হল এক বছর আগে এই শহরে ফুটবল মাঠের দাঙ্গায় ৭৪ জন মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তদের একাংশের বিরুদ্ধে মামালার রায় ঘোষণা৷ ৭০ জনের বেশি অভিযুক্তের মধ্যে ২১ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয় কায়রোর একটি আদালত এই শুক্রবারেই, এবং টেলিভিশনে তা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়৷ এর পর পোর্ট সইদ'এ ক্ষিপ্ত জনতা একটি কারাগার আক্রমণ করে, যেখানে কিছু অভিযুক্তকে বন্দি রাখা হয়েছে৷ দু’টি পুলিশ ফাঁড়িও আক্রান্ত হয়৷ আক্রমণকারীরা স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র ব্হার করে বলে প্রকাশ৷ দাঙ্গায় দু'জন পুলিশের মৃত্যুর খবরও পাওয়া গিয়েছে৷ দৃশ্যত বিক্ষোভকারীদের তরফ থেকে পুলিশের দিকে গুলি চালানো হয়৷
ইসমাইলিয়া ও অন্যত্র মুসলিম ব্রাদারহুডের কার্যালয় আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও মুরসির শাসকদল বিপ্লবের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে সব ধরণের মুখোমুখি প্ররোচনা বাদ দেওয়ারই চেষ্টা করেছে৷ তারা তাদের নিজস্ব কোনো সমাবেশের আয়োজন করেনি৷ বরং তারা একটি নতুন দাতব্য ও সামাজিক উদ্যোগ ঘোষণা করেছে যার নাম হবে ‘‘একত্রে আমরা মিশর গড়ব''৷
এসি / এআই (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)