মিশর
২৭ ডিসেম্বর ২০১২প্রেসিডেন্ট মুরসির সমর্থনপুষ্ট ইসলামপন্থী নীতি নির্ধারক পরিষদ তড়িঘড়ি করে খসড়া সংবিধান তৈরির পর থেকেই এর সমালোচনা করে আসছে মিশরের প্রধান বিরোধী দলগুলো৷ তবে বিরোধীদের দাবি উপেক্ষা করে এই খসড়া সংবিধান প্রশ্নে দুই দফা গণভোট আয়োজন করে মুরসি প্রশাসন৷ এই গণভোটের সরকারি ফলে বলা হয়েছে, ৬৩.৮ শতাংশ ভোটার এই সংবিধানের পক্ষে রায় দিয়েছেন৷ এরপরই প্রেসিডেন্ট মুরসি এতে স্বাক্ষর করে এটিকে আইনে পরিণত করলেন৷
সংবিধানে স্বাক্ষরের পর টেলিভিশনে সম্প্রচারিত জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি এই ঘটনাকে ‘মিশরের জন্য একটি নতুন সকাল' বলে উল্লেখ করেন৷ বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে এই গণভোটে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তোলা হলেও মুরসি তাঁর বক্তৃতায় দাবি করেছেন যে, এই গণভোট হয়েছে ‘স্বচ্ছ এবং সুশীল সমাজ ও বিচার বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে'৷ এছাড়া তিনি আবারও বিরোধী দলগুলোকে সমঝোতা আলোচনায় বসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন৷
তবে বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলমান ঘটনাক্রম সম্পর্কে ‘উভয় পক্ষের কিছু ভুল'-এর কথা স্বীকার করেছেন মুরসি৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘আমাদের মাঝে কিছু ভুল এবং ব্যবধান থেকে গেছে৷ কিন্তু প্রভু জানেন যে, আমি যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেগুলো শুধুমাত্র প্রভু এবং দেশের জন্যেই নিয়েছি৷'' তিনি বলেন, ‘‘যারা এই খসড়া সংবিধানের বিপক্ষে ‘না' সূচক ভোট দিয়েছেন, তাদের সাধুবাদ জানাই এবং মিশরবাসীকে নিশ্চিত করতে চাই যে, এমন সময় আর কখনও ফিরে আসবে না যখন ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে মাত্র একটি পছন্দেরই সুযোগ থাকবে৷''
দেশটির সংকটে থাকা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করাই হবে তাঁর প্রধান দায়িত্ব – এ কথা উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট মুরসি বলেন, ‘‘বড়মাপের হুমকির মুখে থাকা মিশরের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে আমি সকল প্রচেষ্টা চালাবো৷'' নতুন সংবিধানের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে মুরসি বলেন, ‘‘এই সংবিধান মিশরের মানুষের জন্য অধিকতর নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও সামাজিক ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা দেবে৷''
নতুন সংবিধানের বেঁধে দেওয়া কাঠামোর আওতায় আগামী দুই মাসের মধ্যে নতুন করে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে৷ তবে মুরসি এখন পর্যন্ত এই নির্বাচনের জন্য কোনো তারিখ ঘোষণা করেননি৷ বরং তিনি নতুন পরিস্থিতিতে তাঁর মন্ত্রিসভায় রদবদলের কথা জানিয়েছেন৷ এ ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিশাম কান্দিলের সাথে পরামর্শ করছেন৷
এদিকে, মিশরের বিরোধীদলগুলোর মুখপাত্র হুসেইন আব্দেল গানি বলেন, ‘‘চলমান আলোচনা শুধুই নাটকীয় এবং প্রতারণামূলক৷ আমরা মিশরের বিপ্লবের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে ২৫শে জানুয়ারি দেশের মানুষকে নতুন সংবিধানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শনের আহ্বান জানাই৷''
এএইচ/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)