রাহুল বনাম মোদী?
৭ এপ্রিল ২০১৩বহু চর্চিত দুটি বিষয়৷ গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যদি হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির মুখ হয়, তাহলে কংগ্রেসের তরফে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী কে হবেন? বারংবার উঠে আসছে ৪২ বছর বয়সি কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধীর নাম৷ সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য লড়াই হবে রাহুল বনাম মোদীর৷ জনমানসে কে বেশি গ্রহণীয়? একটা তুলনামূলক বিশ্লেষণ চলেছে সুশীল সমাজের মধ্যে৷
ভারতীয় বণিক মহাসঙ্ঘের বার্ষিক সম্মেলনে এক নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করে কংগ্রেস পার্টির সহৃসভাপতি রাহুল গান্ধী তুলে ধরেন তাঁর ‘ভারত ভিশন’৷ ভারতের অর্থনৈতিক মঞ্চে ফেরি করলেন আধুনিক ভারত গড়ার স্বপ্ন৷ চাইলেন ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ৷ বললেন, মুষ্টিমেয় লোকের হাতে ভারতের ভাগ্য নির্ধারত হতে পারে না৷ সেটাকে নিয়ে যেতে হবে নীচু তলা অবধি৷ ভারতীয় অর্থনীতির বিরাট সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে তিনি কর্পোরেট সংস্থাগুলির সহযোগিতা চান৷ তাঁর ভাষণে যত সমস্যার কথা ছিল, তত সমাধান ছিল না৷
মোদীর সমান্তরাল শিল্প-বান্ধব ভাবমূর্তি গড়ে তোলার প্রয়াস বলে অনেকে মনে করছেন৷ কিন্তু কর্পোরেট মহলে তা কতটা দাগ কাটতে পেরেছে তা নিয়ে সংশয়ের অবকাশ আছে৷ প্রথমত, রাহুল বয়সে ও অভিজ্ঞতায় নবীন৷ রাজনৈতিক পোড় খাওয়া মোদীর প্রতিপক্ষ হওয়া বেশ কঠিন হবে রাহুলের, এমনটাই ধারণা বিশ্লেষকদের৷ রাহুল নিজেও জানেন তাঁর সীমাবদ্ধতা৷ বলেছেন, ‘‘অনভিজ্ঞতা আমার প্রধান বাধা’’৷ তাঁর প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারটা নিছক জল্পনামাত্র৷ দেশের মানুষ যা চাইবেন, তাই হবে৷ তবে একথা ঠিক, আমজনতার কাছে রাহুলের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ ও নিষ্কলঙ্ক৷ রাহুল সুবক্তা নয়৷ ৯ বছরের সংসদীয় জীবনে মনে রাখার মতো কোনো বক্তৃতা দেননি৷ তবে পার্টি চাইলে এইসব যুক্তি ধোপে টেঁকার নয়৷
অন্যদিকে, গুজরাটের তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী মোদী এক সফল প্রশাসক ও সুবক্তা হিসেবে প্রমাণিত৷ পরিণত রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার ওপর দাঁড়িয়ে জাতীয় স্তরে বৃহত্তর ভূমিকা পালনে আত্মবিশ্বাস তাঁর অনেকটাই রয়েছে৷ উন্নয়নের মন্ত্র দিয়ে গুজরাটবাসীদের মন জিতে নিয়েছেন তিনি৷ এবার গোটা দেশে সেই মন্ত্র ছড়িয়ে দিতে তৈরি৷ কিন্তু এটাই সব কথা নয়৷ ধর্মনিরপেক্ষ বহুত্ববাদী ভারতীয় সমাজে তাঁর ভাবমূর্তি স্বচ্ছ নয়৷ কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, গুজরাট দাঙ্গা যদি মোদীর কলঙ্ক হয়, তাহলে দিল্লিতে ৮৪ সালের শিখ বিরোধী দাঙ্গা কংগ্রেসের কলঙ্ক নয় কেন?