1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফখরুল ছাড়া বাকি সবাইকে নিয়ে ‘শঙ্কায়’ বিএনপি!

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৭ এপ্রিল ২০১৯

বিএনপি থেকে একাদশ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত সংনদ সদস্য মোট ৬ জন৷ তাঁদের মধ্যে একজন দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ নিয়েছেন৷ বাকি আছেন ৫ জন৷

https://p.dw.com/p/3HYYd
ছবি: picture-alliance/Dinodia Photo

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বিএনপি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন৷ মির্জা ফখরুল ছাড়া বিএনপির বাকি চার নির্বাচিত সদস্যও শেষ পর্যন্ত শপথ নিতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে৷

এই অবস্থায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে শনিবার সন্ধ্যার পর৷ বৈঠকের মূল আলোচনার বিষয়ই হলো জাহিদুর রহমান জাহিদের শপথ গ্রহণ এবং পরবর্তী পরিস্থিতি৷ এই বৈঠকে জাহিদুর রহমাননে দল থেকে বহিস্কারের সিদ্ধান্তও আসতে পারে৷ বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘এসব বিষয়ে দলের মহাসচিব বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন৷''

বিএনপি থেকে নির্বাচিত ছয় জন সংসদ সদস্য হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে আব্দুস সাত্তার ভুঁইয়া, বগুড়া-৬ আসনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে আমিনুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে হারুন অর রশীদ, বগুড়া-৪ আসনে মোশাররফ হোসেন এবং ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে জাহিদুর রহমান জাহিদ৷

বৃহস্পতিবার জাহিদুর রহমান শপথ নেয়ার পর সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘‘দল বহিস্কার করতে পারে জেনেও আমি শপথ নিয়েছি৷ সংসদে গিয়ে আমি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানাবো৷''

তিনি শপথ নিলেও এখনও সংসদ অধিবেশনে যোগ দেননি৷ তাঁর আশা, আরো হয়তো কেউ কেউ শপথ নেবেন৷ তাঁদের নিয়ে একসঙ্গে সংসদ অধিবেশনে যাবেন৷ তবে শপথ নেয়ার পর তিনি সংবাদ মাধ্যমে কথা বললেও তারপর থেকে কথা বলায় বিরত আছেন৷ তাঁর মেবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া গেছে৷

তবে বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যে তারা আশঙ্কা করছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া বাকি চারজনও যেকোনো সময় শপথ নিতে পারেন৷৷ এরইমধ্যে দলের পক্ষ থেকে তাঁদের সঙ্গে কথা বললেও আশ্বস্ত হতে পারছেন না কেন্দ্রীয় নেতারা

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরৗ

জাহিদুর রহমানের শপথ নেয়ার কারণ হিসেবে সরকারের চাপকে মির্জা ফখরুল দায়ী করলেও সরকারের পক্ষ থেকে তা বরাবরই অস্বীকার করা হচ্ছে৷ বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন শনিবার এক কর্মসূচিতে বলেছেন, ‘‘দু-একজন দলছুট নেতা শপথ নিলে কিছু আসে যায় না৷'' একই কর্মসূচিতে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেন, ‘‘বিএনপির নির্বাচিতরা শপথ নিলেও এই সংসদ বৈধতা পাবে না৷''

তবে ড, খন্দকার মোশাররফ হোসেন এর বাইরে আলাদা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বিএনপির নির্বাচিত এমপিদের নিয়ে কি হচ্ছে তা নিয়ে বলার জন্য দলের মহাসচিব দায়িত্বপ্রাপ্ত৷ আজ (শনিবার) সন্ধ্যার পর দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক আছে৷ বৈঠকের পর মহাসচিব সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন৷''

সংবিধানের বিধান অনুযায়ী কোনো সংসদের প্রথম অধিবেশন যেদিন বসে সেদিন থেকে ৯০ দিনের মধ্যে কোনো নির্বাচিত সংসদ সদস্য শপথ না নিলে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়৷ তবে আবেদনের ভিত্তিতে স্পিকার যৌক্তিক মনে করলে সময় আরো বাড়িয়ে দিতে পারেন৷ সেই সময়ের মধ্যে শপথ না নিলে সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়৷

একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে ৩০ জানুয়ারি৷ সেই হিসেকে ২৯ এপ্রিল ৯০ দিন৷ আর ২৯ এপ্রিলের মধ্যে শপথ নিতে হবে সংসদ সদস্যপদ বহাল রাখতে৷ তাই আগামী দুই দিন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা এবং নির্বাচিতদের সময় কাটছে নানা উদ্বেগের মধ্য দিয়ে৷

বিএনপির প্রাধান্যে জাতীয় এক্যফ্রন্টের ব্যানারে গণফোরাম থেকে নির্বাচিত সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ শপথ নেন ৮ মার্চ৷ আর ২ এপ্রিল শপথ নেন গণফোরাম থেকে নির্বাচিত আরেকজন সংসদ সদস্য মোকাব্বির হোসেন৷ তারই ধারাবাকিতায় বৃহস্পতিবার শপথ নেন বিএনপির জাহিদুর রহমানও৷

আমিনুল ইসলাম

বিএনপির আরো ৫ জন নির্বাচিত সংসদ সদস্য আছেন যারা এখনো শপথ নেননি৷ তাদেরমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের (নাচোল- ভোলারহাট - গোমস্তা) আমিনুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি এখনও দলের সিদ্ধান্তেই আছি৷ শপথ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলে আপনাদের জানাবো৷ তবে স্থানীয় পর্যায়ে দলের নেতা-কর্মীরা আমাকে শপথ নেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে৷'' এর আগে ২০ এপ্রিল তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেছিলেন, ‘‘শপথ না নিলে এলাকার লোক আমাকে মারবে।''

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের হারুন অর রশীদ শপথের ব্যাপারে শনিবার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি৷  বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের মোশাররফ হোসেনও সংসদে যেতে ভোটারদের চাপের কথা জানিয়েছিলেন ডয়চে ভেলেকে৷

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরৗ ডয়চে ভেলকে বলেন, ‘‘আমরা ভোট বর্জন করেছি৷ প্রত্যাখ্যান করেছি৷ ভোট ডাকাতির এই নির্বাচন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ তাই আমাদের পার্টির অবস্থান খুবই পরিস্কার৷ কেউ শপথ নেবে না৷ তারপরও কেউ কেউ যদি তার ব্যক্তিগত স্বার্থে শপথ নেয় সেটা তাদের ব্যক্তিগত সমস্যা৷ সে তার আদর্শিক অবস্থান থেকে সরে গেছে৷ তাদের ব্যাপারে গঠনতন্ত্র অনুয়ায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে৷''

তিনি বলেন, ‘‘এতে দলের বা দলের নেতৃত্বের কোনো দুর্বলতা নেই৷ অতীতেও এরকম হয়েছে৷ ওয়ান ইলেভেনের সময়ও হয়েছে৷ যারা বিচ্যূত হন, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হন৷ আর আমি মনে করি তারা শপথ নিলে দলের তৃণমূলে কোনো নেতিবচক প্রভাব পড়বে না৷ দল তার শক্তিশালী অবস্থানেই থাকবে৷''

তবে তিনি মনে করেন, সরকারে চাপে শপথ নিয়েছে মহাসচিবের এই দাবী যৌক্তিক নয়৷ তিনি বলেন, ‘‘চাপ থাকলেই বা কী? একজন নেতার, একজন এমপির নৈতিক ও আদর্শিক অবস্থান থাকবে না?''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য