ঝড়-বিধ্বস্ত এলাকায় বেকহ্যাম
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪প্রাকৃতিক বিপর্যয় মানেই সংবাদ মাধ্যমের স্পটলাইটে এসে পড়া৷ কিন্তু একটা সময় পর শিরোনাম আর টেলিভিশন পর্দা থেকে সরে যায় সেই ঘটনা৷ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে একাই জীবন সংগ্রামে ব্যস্ত হয়ে পড়তে হয়৷
গত বছর ফিলিপাইন্সের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের পর সারা বিশ্ব থেকে ত্রাণ সহায়তা আসতে শুরু করে৷ বিশেষ করে তাকলোবান শহরের ধ্বংসলীলার ছবি ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র৷ সেই বিপর্যয়ে প্রায় ৬,২০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, নিখোঁজের সংখ্যা প্রায় ১,৮০০৷
তাকলোবান সহ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা আবার ধীরে ধীরে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে৷ সেই সব মানুষকে উৎসাহ দিতে তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন ফুটবল তারকা ডেভিড বেকহ্যাম৷ প্রায় ধ্বংসস্তূপের মতো এলাকার মাঝে স্কুলের ছোট মাঠে তিনি স্থানীয় কিশোরদের সঙ্গে ফুটবল খেলে সবার মুখে হাসি ফুটিয়েছেন৷ শুধু খেলা নয়, ছোট বাচ্চাদের কাঁধের উপর চাপিয়ে, তাদের সঙ্গে হই-হুল্লোড় করে মাতিয়ে দিয়েছেন জনতাকে৷ স্থানীয় ফুটবল কোচ বাসিল নুডালো অভিভূত হয়ে বলেন, শিশুদের হৃদয় ভরে গেছে৷ তারা আনন্দে আত্মহারা৷
দু'দিনের জন্য ফিলিপাইন্সের টাইফুন-ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে এসেছিলেন বেকহ্যাম৷ এটা ইউনিসেফের ‘গুডউইল অ্যাম্বাস্যাডর' হিসেবে সে দেশে তাঁর দ্বিতীয় সফর৷ এই ভূমিকায় তিনি এলাকার পুনর্গঠনের কাজে অবদান রাখতে চান৷ সেই কাজে যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, তার জন্য এমনকি সাংবাদিকদের ক্যামেরা ও তাঁদের প্রশ্নবান থেকেও দূরে রাখা হয়েছে ডেভিড বেকহ্যামকে৷ শুধু ইউনিসেফের এক ব্লগে তিনি লিখেছেন, ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও শিশুদের স্বাভাবিক জীবনের ছোঁয়া দেবার যে চেষ্টা চলছে, তা সত্যি বিস্ময়কর৷ জাতিসংঘের অস্থায়ী ক্যাম্পে মানুষের জীবনীশক্তি দেখেও মুগ্ধ বেকহ্যাম৷ একটি তাঁবুতে ঢোকার সময় জুতো খুলে ফেলেন তিনি৷ সেখানে ঘুমন্ত এক শিশুর হাতে হাত বুলোতে দেখা যায় তাঁকে৷ বেকহ্যাম ও তাঁর স্ত্রী ভিক্টোরিয়া তাঁদের ডিজাইনার পোশাক ও জুতো দান করে অর্থ সংগ্রহ করেছেন৷
গত ডিসেম্বর মাসে জাতিসংঘ ফিলিপাইন্সের বিপর্যয় কবলিত এলাকার জন্য সহায়তার ডাক দিয়েছিল৷ প্রায় ৮০ কোটি ডলার লক্ষ্যমাত্রার এখনো পর্যন্ত মাত্র অর্ধেক সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে৷ প্রেসিডেন্ট অ্যাকুউনো বলেছেন, পুনর্গঠনের কাজ শেষ হতে প্রায় চার বছর সময় লাগবে৷ তবে তার জন্য চাই ৮০০ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ৷
এসবি/ডিজি (এএফপি, এপি)