ফেসবুক-ইন্সট্যাগ্র্যাম
১০ এপ্রিল ২০১২আধুনিক প্রযুক্তির আশীর্বাদে মানুষ এখন কোন মুহূর্তকেই হারাতে চায় না৷ তাই পথের বাঁকে যেখানেই যা কিছু চোখে পড়ে তা মোবাইল ফোনে ছবি আকারে কিংবা ভিডিও আকারে ধরে রাখতে চায়৷ আর মোবাইল ফোনের সাহায্যে একে-অপরের সাথে ছবি লেনদেন করার কাজটিকে সহজ করেছে ইন্সট্যাগ্র্যাম৷ এমনকি এদের অ্যাপলিকেশনে রয়েছে এমন একটি ফিল্টার, যা দিয়ে এখনকার তোলা ছবিকেও সেই গত শতাব্দীর সত্তরের দশকের ছবিতে পরিণত করা যায় কিংবা পোলারয়েড ক্যামেরায় ধারণকৃত ছবির রূপ দেওয়া যায়৷
যাহোক, সহজতর প্রযুক্তির জন্য এটার ব্যবহারকারীরা তাদের নাস্তায় থাকা স্যান্ডউইচ থেকে শুরু করে মনোরম সূর্যাস্তে প্রিয়ার হাসিমুখের ছবিসহ প্রায় সবকিছুই ধরে রাখে বলে মনে করা হয়৷ তাই মাত্র এক বছরের কিছু বেশি সময়ে ইন্সট্যাগ্র্যাম তিন কোটিরও বেশি মানুষকে আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে৷ এছাড়া ২০১১ সালে আইফোনের অ্যাপলিকেশনগুলোর মধ্যে বর্ষসেরা হওয়ার কৃতিত্বও গেছে ইন্সট্যাগ্র্যামের ঝুলিতে৷ ফলে এবার ইন্সট্যাগ্র্যাম'এর উপর নজর পড়েছে ফেসবুকের হর্তা-কর্তাদের৷
অবশ্য ইন্সট্যাগ্র্যামের এমন সাফল্যকে অর্থ দিয়ে বিচার করাটা বেশ কঠিন ছিল প্রযুক্তিবিদদের কাছে৷ তবুও সেই দুঃসাহস দেখিয়ে দিল ফেসবুক৷ আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ পর যারা প্রায় একশ' বিলিয়ন ডলারের শেয়ার বাজারে নামতে যাচ্ছে, তাদের কাছে অবশ্য মাত্র এক বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইন্সট্যাগ্র্যাম'কে কেনাটা খুব সামান্য ব্যাপার৷
তবে ফেসবুকের এমন উদ্যোগের প্রেক্ষিতে ওয়েডবুশ প্রতিষ্ঠানের বিশ্লেষক মাইকেল প্যাচটার বলেন, ‘‘ফেসবুক ধীরে ধীরে যেন একে একে সকল শিকার ধরার দিকে এগুচ্ছে৷ তারা এটা নিশ্চিত করতে চায় যে, তাদের পথে কেউ যেন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এসে না দাঁড়ায়, আর এসে দাঁড়ালে তাকে পথ থেকেই সরিয়ে দিতে চায় তারা৷ এটা কেনার মাধ্যমে ফেসবুক তার পথ থেকে এক প্রতিদ্বন্দ্বীকেই শুধু সরিয়ে দিচ্ছে না, একইসাথে ক্রমান্বয়ে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠা একটি প্রযুক্তিকেও নিজেদের সেবার কাজে যুক্ত করতে পারছে৷''
তবে ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক সাকারব্যার্গ বলছেন, ‘‘ফেসবুকের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইল ফলক৷ কারণ প্রথমবারের মতো আমরা এমন একটি পণ্য এবং প্রতিষ্ঠানকে অধিগ্রহণ করছি যেটির প্রচুর ব্যবহারকারী রয়েছে৷'' অবশ্য সমালোচকদের আশঙ্কাকে নাকচ করে দিয়ে সাকারব্যার্গ জানিয়েছেন যে, ইন্সট্যাগ্র্যাম কেনা যদি সম্ভব হয়, তবুও এরপর আর এমন অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার দিকে এগুবে না তারা৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই/ এপি, এএফপি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ