ফ্রান্স আফগানিস্তান থেকে আগেই সৈন্য সরাবে: সারকোজি
২৮ জানুয়ারি ২০১২এক সপ্তাহ আগে চারজন ফরাসি সৈন্য এক আফগান সৈন্যের গুলিতে নিহত হয়৷ সেই ঘটনার পর প্রেসিডেন্ট সারকোজি তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেরার লঙ্গে'কে কাবুল পাঠান, আফগান সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণে নিযুক্ত ফরাসি সৈন্যদের নিরাপত্তা নিয়ে কথাবার্তা বলার জন্য৷ সারকোজি তখনই হুমকি দেন যে, ফরাসি সৈন্যদের উপর এ'ধরণের আক্রমণের কারণে তিনি আরো আগেই আফগানিস্তান থেকে ফরাসি সৈন্য সরিয়ে নিতে পারেন৷ সারকোজির এই মন্তব্যের ফলে ন্যাটোর প্রধানও দুশ্চিন্তায় পড়েন এবং আফগানিস্তানে যে-সব ন্যাটো দেশ সৈন্য পাঠিয়েছে, তাদের প্রতি নিরাপত্তার দায়িত্ব হস্তান্তরের কর্তব্যে অটল থাকার আবেদন করেন৷ ন্যাটো প্রধান আন্ডার্স ফঘ রাসমুসেন'এর বক্তব্য হয়: তিনি ফ্রান্সের উদ্বেগ বুঝতে পারেন৷ কিন্তু সব সত্ত্বেও ২০১৪'র সময়সূচি বজায় রাখা প্রয়োজন৷
অপরদিকে ফরাসি প্রতিরক্ষামন্ত্রী লঙ্গে কাবুলে গিয়ে শোনেন যে, ফরাসি সৈন্যদের হত্যাকারী বস্তুত তালেবানের চর হয়ে আফগান সেনাবাহিনীতে অনুপ্রবেশ করেছে৷ কিন্তু সে নাকি মৃত তালেবান যোদ্ধাদের লাশের প্রতি মার্কিন সৈন্যদের অমর্যাদা প্রকাশের ভিডিও দেখার পরেই ফরাসি সৈন্যদের উপর গুলি চালায়৷
ওদিকে আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই একটি পাঁচদিনব্যাপী ইউরোপ সফর শুরু করেছেন৷ শুক্রবার তিনি প্যারিসে প্রেসিডেন্ট সারকোজির সঙ্গে মিলিত হন৷ সাক্ষাতের পর সারকোজি বলেন যে, ফ্রান্স চলতি বছরের মার্চ মাসের মধ্যে পূর্বের কাপিসা প্রদেশের নিরাপত্তার দায়িত্ব আফগান সৈন্যদের হাতে তুলে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ আফগানিস্তানে নিযুক্ত ৩,৬০০ ফরাসি সৈন্যদের একটি বড় অংশ এখানে স্থাপিত৷ চারজন ফরাসি সৈন্যের হত্যাকাণ্ডটিও এখানে সংঘটিত হয়৷
এছাড়া সারকোজি ২০১৩ সাল শেষ হওয়ার আগে আফগানিস্তান থেকে সব কমব্যাট বা যুদ্ধ সৈনিক সরিয়ে নেবার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন৷ প্রথম এক হাজার যুদ্ধ সৈনিককে নাকি ২০১২'র মধ্যেই ফিরিয়ে আনা হবে৷ প্রেসিডেন্ট কারজাই এবং ন্যাটো সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনার পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বলে সারকোজি জানান৷ ২০১৩'র পরে ‘‘কয়েক শত'' ফরাসি সৈন্য বাকি থাকবে আফগান সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য৷ অপরদিকে সারকোজি বলেন যে, তিনি ন্যাটোকে ২০১৪'র শেষের পরিবর্তে ২০১৩'র মধ্যেই যাবতীয় জঙ্গি কার্যকলাপের দায়িত্ব আফগান সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেবার পরামর্শ দেবেন৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: জাহিদুল হক