বগটুই নিয়ে বিধানসভায় মারামারি, রক্তপাত
২৮ মার্চ ২০২২বগটুই-কাণ্ড নিয়ে বিধানসভায় তৃণমূল ও বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে মারামারি হলো। বিজেপি বিধায়করা সভার ওয়েলে নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন। সেসময়ই তৃণমূলের কয়েকজন বিধায়কের সঙ্গে বিজেপি-র কয়েকজন বিধায়কের হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়।
এক বিধায়ককে মেঝেতে ফেলে মারার অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের এক বিধায়ক অসিত মজুমদারের নাক ফেটেছে। তিনি বলেছেন, ''আমার চশমা ভেঙে দিয়েছে। নাক ভেঙেছে। শুভেন্দু আমায় ঘুষি মেরেছে।''
বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গার শার্ট ছিঁড়েছে। তাকে ঘুষি মারা হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন। বিজেপি-র অভিযোগ, নরহরি মাহাতোকে মাটিতে ফেলে মারা হয়েছে।
ঘটনার সময় মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় ছিলেন না। তিনি পাহাড়ে আছেন। সেখান থেকেই ফোনে তিনি স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কাছে খোঁজ নেন।
ঘটনার পর
স্পিকার শুভেন্দু অধিকারী সহ পাঁচজনকে সাসপেন্ড করেছেন। বর্তমান অধিবেশনে তারা আর যোগ দিতে পারবেন না।
শুভেন্দু জানিয়েছেন, ''আমি ৬০ জন বিধায়ককে সরিয়ে না আনলে কি হতো কে জানে! আমি বিরোধী নেতার দায়িত্ব পালন করেছি। ভিতরে বলতে না দিলে বাইরে বলব।'' তিনি বলেছেন, ''রাস্তা আছে, আমরা রাজ্যপালের কাছেও যাব।''
স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিজেপি বিধায়করা নারী রক্ষীদের আক্রমণ করেছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, নারী বিধায়কদের সম্মানহানি করা হয়েছে। উসকানি দিয়েছেন বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, বিধানসভাকে কলুষিত করেছেন শুভেন্দু।
রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, তারা আলোচনার দাবি জানাচ্ছিলেন। তখন তৃণমূলের বিধায়করা বিজেপি বিধায়কদের আক্রমণ করেন।
লোকসভাতেও বিজেপি সাংসদরা বিষয়টি তোলেন। সৌমিত্র খান অভিযোগ করেন, এরকম ঘটনা কেন ঘটবে? পরে বিজেপি সাংসদরা গান্ধী মূর্তির সামনে বিক্ষোভ দেখান।
নাজিমা বিবির মৃত্যু
বগটুই-কাণ্ডে আহত নাজিমা বিবির মৃত্যু হলো। তার শরীর ৬০ শতাংশের বেশি পুড়ে গেছিল। আরো দুইজন হাসপাতালে ভর্তি। তাদের চিকিৎসা চলছে।
সিবিআই জেরা চলছে
তিনদিন ধরে বগটুইয়ের মানুষ, দমকল কর্মী, মৃতদের আত্মীয়দের জেরা করছে সিবিআই। ওই দিনের ভয়ঙ্কর ঘটনার পুনর্নিমাণ করার চেষ্টা করছে। তারা ঘটনাস্থল গেছে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলছে। রোজই জেরা করে তথ্য জানার চেষ্টা করছে।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বগটুই-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। তারপর থেকেই সিবিআই তদন্তে নেমে পড়েছে। তারা তিনদিন ধরে বিভিন্ন মানুষকে জেরা করে যাচ্ছে। দমকল কর্মীদের জেরা করা হয়েছে। গ্রামের সাধারণ মানুষ, মৃতের অত্মীয় এবং গ্রেপ্তার হওয়া তৃণমূল নেতা আনারুলকেও জেরা করে। সূত্র জানাচ্ছে, আনারুল সিবিআই অফিসারদের বলেছেন, তিনি নির্দোষ। তাকে ফাঁসানো হয়েছে।
দমকল কর্মীদের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে, কখন তারা গিয়েছিলেন, কতক্ষণ ছিলেন! সব নিয়ম মানা হয়েছিল কি না। যদি মানা হয়, তাহলে পরের দিন সকালে কী করে সাতটি মৃতদেহ পাওয়া গেল?
জিএইচ/এসজি (পিটিআই, এবিপি আনন্দ)