বন-এর আফগানিস্তান সম্মেলন বর্জন করছে পাকিস্তান
২৯ নভেম্বর ২০১১২০১৪ সালে ন্যাটোর সৈন্যদের আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে আনার কথা৷ তার পর ঐ দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করতে এই সম্মেলন হবে ৫ই ডিসেম্বর৷ এবং এতে পাকিস্তানের অংশগ্রহণকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছিল৷ কিন্তু ক্যাবিনেটের এক জরুরি বৈঠকে সম্মেলনে যোগ না দেয়ারই সিদ্ধান্ত নেয়া হলো৷ প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির দপ্তর থেকে বলা হয়, উপজাতীয় এলাকা মোহমান্দে শনিবারের হামলার মতো ‘একপেশে অ্যাকশন' গ্রহণযোগ্য নয়৷
ন্যাটোর এই বিমান হামলা মার্কিন-পাকিস্তান সম্পর্কে বেশ বড় রকমের চিড় ধরিয়েছে বলেই মনে হয়৷ ইসলামাবাদ সরকার এই হামলার কঠোর নিন্দা করেছে এবং ন্যাটো আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার সহযোগিতার বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা ঘোষণা করেছে৷ আফগানিস্তানে ন্যাটোর নেতৃত্বাধীন আইসাফ সেনাদের জন্য পাকিস্তান থেকে গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ এই হামলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে প্রচণ্ড৷ পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আর ‘‘বিজনেস অ্যাজ ইউজুয়াল'' নয়৷ ইসলামাবাদ শুধু আফগান সীমান্ত বন্ধ করেই ক্ষান্ত হয়নি, অ্যামেরিকানদের নাকি একটি বিমান ঘাঁটি থেকে সরে যাওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে৷ তাছাড়া অ্যামেরিকার সঙ্গে তার জোট-সহযোগিতার পর্যালোচনা করার কথাও জানিয়েছে পাকিস্তান৷
স্বাগতিক দেশ জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল আফগানিস্তান সম্মেলনে পাকিস্তানের যোগ না দেয়ার সিদ্ধান্তে দুঃখ প্রকাশ করেছেন৷ আজ মঙ্গলবার বার্লিনে জর্ডানের সফররত বাদশাহ দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ'র সঙ্গে এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, জার্মানি এবং পাকিস্তান উভয়েই আফগানিস্তানের গঠনমূলক অগ্রগতিতে আগ্রহী৷ আর তাই জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহৃত এই সম্মেলনটি গুরুত্বপূর্ণ৷ প্রায় শতাধিক দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এতে যোগ দেবেন৷ চ্যান্সেলর ম্যার্কেল অবশ্য এখনও এই মর্মে আশাবাদী যে সম্মেলনে যোগ দেয়ার ব্যাপারে পাকিস্তানকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাজি করানো যাবে৷ কাবুলে ন্যাটোর একজন মুখপাত্রও আশা করছেন যে ইসলামাবাদ তার এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে৷
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে হামলার ঘটনার তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে৷ তদন্ত পরিচালনা করবেন মার্কিন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল স্টিফেন ক্লার্ক৷ ২৩ শে ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁকে রিপোর্ট দিতে হবে৷
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জে কার্নে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা শনিবারের ঘটনাকে একটা ‘‘ট্র্যাজেডি'' বলেই মনে করেন৷ এবং ওয়াশিংটন পাকিস্তানের সঙ্গে ‘‘গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতার সম্পর্ক''কে মূল্য দেয়৷
প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ