বন্যার সময় খাবার রক্ষায় বিশেষ বাক্স
১৯ আগস্ট ২০১৬আগামী ২০১৯ সালের জুন নাগাদ বাংলাদেশ সরকার বন্যাপ্রবণ এলাকায় পঞ্চাশ হাজার ‘সিলো' বা প্লাস্টিকের বিশেষ পাত্র দেবে, যেগুলোর মধ্যে খাদ্যশস্য মজুদ করে রাখা যাবে৷ ঘরের মধ্যে গর্ত করে কিংবা অন্য কোনো উপায়ে এসব বাক্স রাখা যাবে, যাতে বন্যার সময় পানিতে তলিয়ে গেলেও ভেতরে থাকা খাবার নষ্ট না হয়৷
সরকার, জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন উন্নয়নসংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে তৈরি মানবিক সহায়তা সমন্বয় বিষয়ক টিমের হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে জুলাইয়ের মাঝামাঝির দিকে শুরু হওয়া বন্যায় এখন পর্যন্ত ১৯ জেলায় ৩৭ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
বন্যায় আড়াই লাখ বাড়ির ক্ষতি হয়েছে, যার মধ্যে নদী ভাঙ্গনের কারণে পুরোপুরি ভেসে যাওয়া ১৭ হাজার বাড়ি এবং আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ৬৫ হাজার বাড়ি রয়েছে৷ বন্যায় প্রাণহানি হয়েছে এখন পর্যন্ত ১১০ জনের, যার মধ্যে অধিকাংশই শিশু৷
যদিও পানি এখন কমে আসছে, তবে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, নেপাল এবং ভারতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে চলতি মাসে বন্যা আবারো বাড়তে পারে৷ গত দুই বা তিন দশকের মধ্যে এটাই বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বন্যা৷
বন্যা উপদ্রুত এলাকার মানুষদের সহায়তায় অন্যান্য উদ্যোগের পাশাপাশি তাদের খাদ্যশস্যের মজুদ সুরক্ষায় উদ্যোগ নেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, কেননা, দেখা যায়, বাড়িতে খাদ্যের মজুদ থাকলেও বন্যায় তা নষ্ট হয় এবং বন্যা পরবর্তী সময় বাড়ির বাসিন্দাদের খাবার থাকে না৷ ফলে পানি গেলেও কষ্ট কমে না, বরং বাড়ে৷
বন্যা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় তাই বাড়িতে বাড়িতে খাদ্যশস্য মজুদের জন্য প্লাস্টিকের বিশেষ পাত্র দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার৷ আর এতে সাড়ে আট মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক৷ পাত্রগুলো তৈরি করছে মদিনা পলিমার ইন্ডাস্ট্রিস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান৷
আগামী ২০১৯ সাল নাগাদ বন্যা উপদ্রুত এলাকার অনেক বাড়িতে এই পাত্র দেয়া হবে৷ পাশাপাশি সরকার বন্যা উপদ্রুত এলাকায় আটটি বড় পাত্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে, যেগুলোতে সাড়ে পাঁচ লাখ টন শস্য মজুদ রাখা যাবে, যা বন্যা পরবর্তী সময়ে ব্যবহার সম্ভব হবে৷