'বর্ণবাদ জার্মানির গণতন্ত্রের জন্য হুমকি’
১৫ জানুয়ারি ২০২৩বছরের পর বছর এই সমস্যাকে উপেক্ষা করার প্রবণতার অবসানের আহ্বান জানান দেশের প্রথম বর্ণবাদবিরোধী কমিশনার।
"বর্ণবাদ একটি বিমূর্ত ধারণা নয়, আমাদের সমাজের অনেক মানুষের জন্য একটি বেদনাদায়ক এক বাস্তবতা," বুধবার জার্মানিতে বর্ণবাদের উপর সরকারের প্রথম বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে রিম আলাবালি-রাদোভান এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘‘বর্ণবাদ গণতন্ত্রের জন্য বড় হুমকি, কারণ, এটা মানুষ এবং তাদের মানবিক মর্যাদাকে আঘাত করে, যা মৌলিক আইন দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছে।’’
ক্ষতিগ্রস্তদের ভালোমতো সমর্থন দেয়া ছাড়াও প্রতিদিন ও কাঠামোগত পর্যায়ে বর্ণবাদের যেসব ঘটনাগুলো ঘটে. সেগুলোকে ‘স্বীকার করার’ প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন নতুনভাবে সৃষ্ট বর্ণবাদবিরোধী কমিশনের কমিশনার আলাবালি-রাদোভান।
ফেডারেল কমিশন ফর মাইগ্রেশন, রিফিউজি অ্যান্ড ইন্টিগ্রেশন জার্মানিতে অভিবাসী ও তাদের বংশধরদের পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত রিপোর্ট প্রকাশ করে। এসব রিপোর্টের ফাঁকফোকর পূরণ করবে প্রথমবারের মতো জার্মানিতে বর্ণবাদ নিয়ে প্রকাশিত এই প্রতিবেদন।
এই প্রতিবেদন তৈরির জন্য আলাবালি-রাদোভানের অফিস বিভিন্ন সংস্থা পরিচালিত রিপোর্টসমূহ সংগ্রহ করে। এর মধ্যে রয়েছে জাতীয় বৈষম্য ও বর্ণবাদ পর্যবেক্ষণ সংস্থারও প্রতিবেদন, যারা বর্ণবাদের বিষয়ে টেলিফোনে ৫,০০০ মানুষের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছে।
ঐ জরিপে অংশ নেয়া ৯০ শতাংশ মানুষ বলেছেন, জার্মানিতে বর্ণবাদ একটি সমস্যা। আর ২২ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেন যে ব্যক্তিগতভাবে তারা বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন।
সরকারি অপরাধ বিষয়ক পরিসংখ্যান মতে, ২০২২ সালে ১,০৪২টি ‘‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত" সহিংস অপরাধের ঘটনা ঘটেছে, যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ বর্ণবাদী প্রকৃতির। তবে নতুন এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, স্বাধীনভাবে পরামর্শ প্রদান করা সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো কমপক্ষে ১,৩৯১টি শারীরিক আক্রমণের খবর পেয়েছে।’’
নববর্ষের প্রাক্কালে বার্লিন ও অন্যান্য শহরের অভিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে রাস্তায় সহিংসতার ঘটনার পর আলাবালি-রাদোভানের এই প্রতিবেদন অভিবাসীদের নিয়ে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
‘‘এই বিতর্কের মধ্যে আমাদের শিখতে হবে কভাবে বর্ণবাদের গতানুগতিক ধারণা থেকে বের হয়ে ২০২৩ সালে সামাজিক সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করা যায়,’’ বলেছেন আলাবালি-রাদোভান।
এইসব বিষয় সামনে রেখে তার অফিস আগামীতে অনেকগুলো পদক্ষেপ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করছে।
সেগুলো হলোঃ সম্প্রদায়-ভিত্তিক কাউন্সেলিং, পরিষেবাগুলো শক্তিশালী করা, বর্ণবাদের একটি আইনি সংজ্ঞা তৈরিসহ এ বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করা, ইন্টারনেটে ঘৃণামূলক বক্তব্যের বিরুদ্ধে আইন কঠোর করা এবং এটা নিশ্চিত করা যেন সর্বস্তরের নেত্রীবৃন্দ বর্ণবাদবিরোধী কর্মকাণ্ডে নিজেদের আরও বেশি জড়িত হয়।
এলিজাবেথ শুমাখার/একেএ