‘বাংলাদেশ প্রস্তুত ছিল না, তাই প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি’
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮বৃহস্পতিবার ভিয়েতনামের হ্যানয়ে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের আঞ্চলিক বৈঠকে এমন মন্তব্য করেন তিনি৷ সু চি বলেন, ‘‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ২৩ জানুয়ারি শুরু হওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু সেই সময় বাংলাদেশ জানায়, তারা এখনো প্রস্তুত নয়৷ ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর আমরা এমওইউ স্বাক্ষর করেছিলাম৷ চুক্তিতে যেহেতু দুই দেশ সম্পর্কিত, তাই কখন প্রত্যাবর্তন শুরু হবে সে বিষয়ে আমরা একা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না৷’’
সু চি বলেন, যারা পালিয়ে গেছে, তাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার প্রস্তুত, কিন্তু এর সঙ্গে দুই দেশ জড়িত থাকায় বিষয়টি জটিল হয়ে গেছে৷
মানবাধিকার কর্মীরা অবশ্য মনে করেন, শরণার্থীদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের শর্ত এখনো পূরণ হয়নি৷
তিনি বলেন, রাখাইনে শুধু মুসলমানরাই বাস করে বলে আন্তর্জাতিক বিশ্বের অনেকে মনে করে৷ কিন্তু আসলে সেখানে আরো ছোট ছোট গোষ্ঠী আছে৷ তাদেরকে রক্ষার দায়িত্বও মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর৷ ‘‘সবার জন্যই আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে৷ আমরা শুধু কাউকে বাছাই করে তাদের দেখভাল করতে পারি না,’’ বলেন সু চি৷
তবে রোহিঙ্গা বিষয়টি আরো ভালোভাবে সামলানো যেতো বলেও মনে করেন নোবেলজয়ী এই নেত্রী৷ তিনি বলেন, ‘‘ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর আমার মনে হয়েছে, পরিস্থিতিটা আরো ভালোভাবে সামলানো যেতো৷’’
সম্প্রতি মামলায় প্রভাব খাটিয়ে রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে জেল দেয়ার ঘটনায় মিয়ানমারের যে সমালোচনা চলছে, তা-ও অস্বীকার করেন সু চি৷ তিনি বলেন, ‘‘উন্মুক্ত আদালতে মামলা চলেছে৷ যদি কেউ মনে করেন বিচার ঠিকমতো হয়নি, আমি চাইব তারা সেটি উল্লেখ করুন৷
‘‘সাংবাদিক বলে তাদের শাস্তি দেয়া হয়নি, তাদের জেল দেয়া হয়েছে, কারণ, আদালত মনে করেছেন তারা অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ভঙ্গ করেছেন,’’ বলেন সু চি৷
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিভাগে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ফিল রবার্টসন বলেন, সু চি যখন বলেন ‘আইনের শাসন’ মেনে মামলা চলেছে, তখন তিনি ভুল বলেন৷ ‘‘তিনি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন যে, প্রকৃত ‘আইনের শাসন’ বলতে বোঝায়, আদালতে উপস্থাপন করা প্রমাণাদি বিবেচনা করা এবং সরকার বা নিরাপত্তা বাহিনীর প্রভাবমুক্ত স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা৷’’
জেডএইচ/এসিবি (এপি, এএফপি)