মেয়াদ নিয়ে সংশয়!
৩০ এপ্রিল ২০১৪সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর এই প্রথম জার্মানির সাংসদদের কোনো দল ঢাকায় এল৷ ডাগমার জি ভ্যোর্ল-এর নেতৃত্বে সাত সদস্যের জার্মান সংসদীয় প্রতিনিধি দল ঢাকা আসে গত শনিবার৷ তাঁদের ঢাকা সফরে মূল উদ্দেশ্য হলো রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের পোশাক খাতে কতটা ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে তা সরেজমিন দেখা৷ এ জন্য তাঁরা সাভারে রানা প্লাজা পরিদর্শন এবং সিআরপি-তে চিকিত্সাধীনদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন৷ দেখা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে৷
সংবাদ সম্মেলনে ডাগমার জি ভ্যোর্ল বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতকে এখন শ্রমিকদের নিরাপত্তা, অধিকার এবং স্বাস্থ্যের দিক বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক মান অর্জন করতে হবে৷ পোশাক কারখানা হতে হবে আধুনিক এবং আইএলও-র নির্দেশিত মান বজায় রাখতে হবে৷ তিনি মনে করিয়ে দেন যে বাংলাদেশের মোট তৈরি পোশাকের ১৭ ভাগ যায় জার্মানিতে৷ আর জার্মানি বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার৷ বাংলাদেশ এরই মধ্যে অনেক কাজ করেছে পোশাক খাতের উন্নয়নে৷ কিন্তু আরো অনেক কাজ বাকি৷ আর এই কাজে জার্মানি বাংলাদেশের পাশে থাকবে৷
জার্মান অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ক সংসদীয় কমিটির নেতা বলেন, ‘‘গত ৫ই জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনে অল্প সংখ্যক ভোটারের ভোটে বর্তমান সরকার নির্বাচিত হয়েছে, যা নিয়ে জার্মান সংসদ উদ্বিগ্ন৷ বিপুল সংখ্যক ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন৷ তারপরও দেশে আবার স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে তা প্রশংসা পাবার যোগ্য৷'' তবে তিনি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি দ্রুত সংলাপ শুরু না হয়, তাহলে এই সরকার তার পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারবে কি না তা নিয়ে আমরা সন্দেহ করি৷'' তাই তিনি যত দ্রুত সম্ভব একটি কার্যকর সংলাপ শুরুর তাগিদ দেন ৷
মধ্যবর্তী কোনো নির্বাচন তারা চান কিনা – এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে আগাম বা মধ্যবর্তী কোনো নির্বাচন হবে কিনা, তা বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণের বিষয়৷ তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন৷ তবে আমরা রাজনৈতিক সমঝোতা চাই৷'' একই প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত জার্মান রাষ্ট্রদূত আলব্রেশট কনৎসে বলেন, ‘‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হয়েছে এ নিয়ে আমাদের উদ্বেগ নেই৷ আমাদের উদ্বেগ রাজনৈতিক দলগুলো সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে একমত হতে পারেনি তা নিয়ে৷''
এদিকে সকালে জার্মান সংসদীয় প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করে৷ সাক্ষাতকালে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়নে অতীতের মতো জার্মান সরকার, জনগণ ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সহায়তা কামনা করেন৷ আহ্বান জানান বাংলাদেশে আরো বেশি বিনিয়োগের৷
আর জার্মান সংসদীয় প্রতিনিধি দলের নেতা জানান, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উন্নীত হওয়ার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, সে লক্ষ্য অর্জনে জার্মানি সহায়তা করবে৷ সহস্রাব্দের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের উল্লেখ করার মতো সাফল্যের প্রশংসাও করেন জার্মান প্রতিনিধি দলের সদস্যরা৷