অপরাধ ট্রাইবুনাল
৮ আগস্ট ২০১২একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের জামিন আবেদন নাকচ করে দিয়েছে৷ বিচারাধীন মামলা বা মামলা প্রক্রিয়া সম্পর্কে মন্তব্য সমীচীন না হলেও এই উদ্যোগ সম্পর্কে নানারকম প্রতিক্রিয়া শোনা যাচ্ছে৷ এর নানা দিক ব্যাখ্যা করেছেন ব্রাসেলস ভিত্তিক আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ ড.আহমেদ জিয়াউদ্দিন৷
তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাজের গতি নিয়ে অসন্তুষ্টির কোনো কারণ নেই৷ বাংলাদেশের ট্রাইবুনালের নামের আগে ‘আন্তর্জাতিক' শব্দটি থাকায় অনেক মহল এর ভুল ব্যাখ্যা করছে৷ কারণ বাংলাদেশে দেশীয় আইনের অধীনে বিচার প্রক্রিয়া চলছে৷ বাংলাদেশের ট্রাইবুনাল যে গতিতে এগোচ্ছে, বিশ্বের কোনো আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল তার ধারে কাছে আসতে পারে না বলে মনে করেন ড.আহমেদ জিয়াউদ্দিন৷ মনে রাখতে হবে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত ১০ বছর পর প্রথম রায় দিয়েছে৷
জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলি সারা পৃথিবীতে ব্যাপক আকারে এই বিচার প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়ে আসছে৷ ফলে বিভিন্ন দেশের সরকার, মানবাধিকার সংগঠন এই প্রক্রিয়ার উপর নজর রাখছে৷ তবে তারা বিচারাধীন প্রক্রিয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করে না, এ ক্ষেত্রেও করছে না৷ ড. জিয়াউদ্দিনের মতে, তবে এই প্রক্রিয়াকে ঘিরে দেশের মানুষের প্রত্যাশার কথা ভালোভাবেই বোঝা সম্ভব৷ অনেকের কাছে মনে হচ্ছে, বেশি সময় লাগছে৷ কিছু ক্ষেত্রে গতি বাড়ানো হয়তো সম্ভব হতে পারতো৷ কিন্তু দ্রুত বিচারের চেয়ে প্রয়োজন সুষ্ঠু বিচার, ন্যায়বিচার৷ দেশের মানুষের আশঙ্কা, সরকার পরিবর্তন ঘটলে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ কী হবে৷
আন্তর্জাতিক স্তরে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগের ফলে বিভিন্ন মহল উদ্বেগ প্রকাশ করছে৷ তবে যে তথ্যের ভিত্তিতে এই সব মন্তব্য করা হচ্ছে, তার মধ্যে প্রচুর ভুল রয়েছে৷ কিন্তু পাল্টা ব্যাখ্যা দেওয়ার কোনো কাঠামো না থাকায় সঠিক চিত্র উঠে আসছে না৷ সরকার বা অন্য কোনো নিরপেক্ষ সংগঠন এই কাজ করছে না৷ ফলে প্রচারণার এই অভিযান টিকে যাচ্ছে বলে মনে করেন ড. জিয়াউদ্দিন৷ তাছাড়া বাংলাদেশে ট্রাইবুনালের নামের আগে ‘আন্তর্জাতিক' শব্দটি থাকায় অনেকেই এটিকে প্রকৃত আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল ধরে নিয়ে কাজ করছে৷ এই ভুল থেকেই যাচ্ছে৷
সাক্ষাৎকার: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ