1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশ নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ

৩০ মার্চ ২০১৭

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিবেদনে বাংলাদেশে গুম, অপহরণ ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বেড়ে গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে৷ সমালোচনা করা হয়েছে বাকস্বাধীনতা হরণ ও বিশেষ অবস্থায় বাল্যবিবাহকে অনুমোদন দেয়ার বিষয়টিও৷

https://p.dw.com/p/2aL2n
Bangladesch - Landesweiter Streik
ছবি: Getty Images

মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশকে অবশ্যই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গুম, অপহরণ ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো তদন্ত করে দেখতে হবে৷ ঘটনার শিকার যাঁরা, সেইসব নাগরিকদের যথাযথ সহায়তা দিতে হবে বাংলাদেশের৷ সরকারের উচিত গুম ও অপহৃত ব্যক্তিদের সন্ধান করা এবং তাঁদের আত্মীয়দের তদন্তের অগ্রগতি জানানো৷’

প্রতিবেদনে ছ'মাস আগে বিরোধী দলের তিন নেতার তিন সন্তানের অপহরণ হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়৷ সে সময় জাতিসংঘের ‘গ্রুপ ইনভলান্টারি এনফোর্সড ডিসাপেয়ারেন্স' বাংলাদেশ সরকারকে তাদের খুঁজে বের করার আহ্বান জানায়৷ হাম্মাম কাদের চৌধুরী নামে তাঁদের একজন ইতিমধ্যে মুক্তি পেলেও, আরো দু'জন মীর আহমেদ বিন কাশেম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুল্লাহ হিল আমান আল-আজমি এখনো রাষ্ট্রের কাছে বন্দি আছেন বলে তারা দাবি করছে৷

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর, বাংলাদেশে ১৩০০-এরও বেশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও ৩২৫টি গুমের ঘটনা ঘটেছে৷ এর আগে বিএনপি সরকারের আমলেও এমন ঘটনা ঘটেছে বলে বলা হয় রিপোর্টে৷ তবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের এমন অসংখ্য ঘটনা নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সীমাবদ্ধতা আছে বলে অভিযোগ করেছে জাতিসংঘ৷ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিশেষ করে পুলিশ, সামরিক বাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যেখানে জড়িত, সেখানে মানবাধিকার কমিশনের এখতিয়ার সীমিত৷’

বাংলাদেশের নাগরিকদের বাকস্বাধীনতার অভাব নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে৷ বহুল সমালোচিত আইসিটি আইনের আওতায় ২০১৬ সালে ৩৫ জন সাংবাদিক, ব্লগার ও মানবাধিকার কর্মীকে আটক করা হয়েছে উল্লেখ করে এর সমালোচনা করেছে সংগঠনটি৷

তবে ২০১০ সালের জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি, গৃহকর্মী নির্যাতন প্রতিরোধে আইন, ২০১৩ সালের প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইন এবং পুলিশ হেফাজতে আসামি নির্যাতন ও মৃত্যু নিরোধ আইনকে ইতিবাচকভাবে দেখছে জাতিসংঘ৷ মানবপাচার রোধে ২০১২ সালে প্রণয়ন করা আইনটিরও প্রশংসা করেছে সংস্থাটি৷

জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন নিয়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচলাক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারের নামে মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে৷ ঘটছে গুম ও অপহরণের ঘটনাও৷ মানবাধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদির ধরে এর স্বাধীন তদন্ত দাবি করে আসছে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে৷ কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, সরকার এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না৷ ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই ঘটনাগুলো থামছে না এবং তার সঙ্গে বিচার পাওয়ার পথও খুলছে না৷’’

‘একটা দম বন্ধ করা অবস্থার মধ্যে আমরা আছি’

তিনি বলেন, ‘‘আজকে জাতিসংঘ একই কথা বলছে৷ যাঁরা ভুক্তভোগী, তাঁদের বিচার পাওয়ার অধিকার আছে৷ তাছাড়া রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব তাঁদের বিচার নিশ্চিত করা৷’’

বাকস্বাধীনতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারার যথেচ্ছ অপব্যবহার হচ্ছে বাংলাদেশে৷ এছাড়া বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের মালিক ও সম্পাদকদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে, নানারকম মামলায়৷ অবশ্য এই মামলা যে সরাসরি সরকার দিচ্ছে, তা নয়৷ সরকারি দলের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের এই মামলা দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে৷ বহু সম্পাদকের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছে৷ ফলে এক ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছে এ মুহূর্তে৷ সংবাদ কর্মীরা সেন্সরশিপের কারণে ভুগছেন৷ ওদিকে সাধারণ মানুষও এক ধরনের ভয়ের মধ্যে থেকে মুক্ত মনে কথা বলার অধিকার হারাচ্ছে৷

নূর খান আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘এটাকে এক কথায় ব্যাখ্যা করলে বলা যায়, গলা টিপে ধরলে যা হয়, সেই অবস্থা এখন বাংলাদেশে৷ একটা দম বন্ধ করা অবস্থার মধ্যে আমরা আছি৷’’

প্রিয় পাঠক, এই বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন নীচে মন্তব্যের ঘরে...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য